সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিনে সারাদেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গণটিকার আওতায় এদিন ৭৫ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। এর পাশাপাশি অন্যান্য দিনের নিয়মিত ৫ লাখ টিকাও প্রদান চলবে।
টিকা নেওয়ার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ও টিকাকার্ড সঙ্গে আনতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি ইউনিয়নের কোনও একটি ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে একটি বুথ, পৌরসভার প্রতিটি কেন্দ্রে একটি কেন্দ্রে একটি বুথ, সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩টি বুথের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। সারাদেশে আগে থেকে যেসব কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি চলছিল সেগুলো অব্যাহত থাকবে। টিকাদান শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। তবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় দুপুর আড়াইটা থেকে দেওয়া হবে টিকা। কর্মসূচি বাস্তবায়নে সারা দেশের সব কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
খুরশীদ আলম বলেন, মঙ্গলবার যে গণ টিকাদান হবে, সারা দেশে কোভিড-১৯ এই ক্যাম্পেইনে আমরা শুধু প্রথম ডোজের টিকা দেবো এবং একইভাবে আগামী মাসের একই তারিখে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেবো। আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় না পৌঁছা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে টিকাদান চলমান থাকবে। শেষ টিকা প্রদানের পর আমাদের টিম এক ঘণ্টা অবস্থান করবে। স্থানীয়ভাবে টিকাদানের সময় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে। কোনোভাবেই আমাদের ইপিআই সেশনের টিকা দেওয়া বন্ধ রাখা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এই ক্যাম্পেইনে আগে থেকে নির্ধারিত জনগোষ্ঠী ২৫ বছর বয়সী বা তদূর্ধ্বদের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়ে টিকা দেবো।
ক্যাম্পেইন শুরুর প্রথম ২ ঘণ্টা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পঞ্চাষোর্ধ্ব বয়স্ক নাগরিক, নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে ডা. আবুল বাশার বলেন, তবে স্তন্যদানকারী মা ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনবো না।
এ দিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি কেন্দ্রে গণটিকা দেওয়া হবে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় আজ ৫৪টি ওয়ার্ডের নির্ধারিত ৫৪টি কেন্দ্রেই কোভিড-১৯ এর টিকা কার্যক্রম চলবে। এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭৫টি ওয়ার্ডের ৭৫টি টিকা কেন্দ্রেও চলবে গণটিকা কার্যক্রম।
জানা গেছে, উত্তর সিটি করপোরেশনে মঙ্গলবার ও পরের দিন বুধবার প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হবে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৫০০ জন করে দুই দিনে মোট ১ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হবে। যারা ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার যে কোনও হাসপাতালে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু এখনও এসএমএস পাননি শুধুমাত্র তারাই এই কার্যক্রমের আওতায় টিকা নিতে পারবেন। তবে ষাটোর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম ভিন্ন। ষাটোর্ধ্ব কেউ রেজিস্ট্রেশন না করলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সাথে নিয়ে গেলে টিকা দেওয়া হবে।
এছাড়াও টিকা গ্রহণকারীগণ যে কেন্দ্র থেকে ১ম ডোজের টিকা গ্রহণ করবেন এক মাস পর একই কেন্দ্র থেকে ২য় ডোজের টিকাও গ্রহণ করতে পারবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে ৭৫টি কেন্দ্রে গণটিকা দেওয়া হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৩৫০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এদিন টিকা গ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে আগামী ২৮ অক্টোবর। সবমিলিয়ে এই কার্যক্রমে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মোট ৫২ হাজার ৫০০ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
এবারের টিকাদান কর্মসূচি ‘গ্রামগঞ্জ’ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সেখানে দরিদ্র জনগোষ্ঠী রয়েছেন, যাদের মধ্যে অনেকে বয়স্ক রয়েছেন, হার্ড টু রিচ এলাকায়- যারা সব সময় টিকাদান কেন্দ্রে আসতেও পারেন না, তাদের জন্য এবারের টিকাদান কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার থাকবে।