রাজধানীর কলাবাগান থেকে সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানাসহ ২২ মামলার পলাতক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিককালে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাম্প্রতিক এসব প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৬ মে) সাড়ে ১১ টার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, কলাবাগান থানাধীন বাংলামোটর এলাকায় সাজাপ্রাপ্ত গ্রেফতারী পরোয়ানাসহ ২২ মামলার পলাতক দম্পত্তি অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল ঢাকা মহানগরস্থ উক্ত এলাকায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) রাত সোয়া ১২ টায় অভিযান পরিচালনা করে ০২ জন প্রতারক’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এইচ এন এম সফিকুর রহমান, (৫৯), জেলাঃ কুমিল্লা ও কাজী সামছুল নাহার মিনা (৫৪), জেলাঃ কুমিল্লা।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, সফিকুর রহমান ২০০২ সালে আইডিয়াল কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামে একটি সমবায় প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এই প্রতিষ্ঠানের তিনি নিজে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ছিলেন এবং তার পরিবারের সদস্যগণ উক্ত প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান চালু করে তিনি লোকজনের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে “আইসিএল রিয়েল স্টেট” নামে প্রতিষ্ঠান খুলে রিয়েল স্টেট এর ব্যবসা শুরু করেন। রিয়েল স্টেট ব্যবসাতেও তিনি মানুষের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ভুক্তভোগীরা তার নামে থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করলেও সে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখাতে থাকে যার ফলে ভুক্তভোগীরা অনেকেই মামলা করতে সাহস পায়নি। তথাপিও তার ও তার স্ত্রীর নামে বিজ্ঞ আদালতে সাজাসহ মোট ২২টি ওয়ারেন্ট ইস্যু হলে তারা পলাতক হয়ে যান এবং তারা গ্রেফতার এড়াতে প্রতি দুই তিন মাস অন্তর অন্তর বাসা পাল্টানোসহ ক্রমান্বয়ে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করতে থাকেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট থানার অধিযাচনের ভিত্তিতে র্যাব-৪ আসামীদের অবস্থান চিহ্নিত করতে মাঠে নামে। আসামী এইচ এন এম সফিকুর রহমান (৫৯) এর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ০২ টি সিআর (সাজা) ওয়ারেন্ট এবং পল্টন ও চৌদ্দগ্রাম থানায় মোট ১৯ টি ওয়ারেন্টসহ ০৬ টি নিয়মিত মামলা ও খিলক্ষতে থানায় ০১ টি নিয়মিত মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও তার স্ত্রী কাজী সামছুন নাহার মিনা (৫৪) এর নামে পল্টন থানায় ০৩ টি ওয়ারেন্ট ও চৌদ্দগ্রাম থানায় ০৬ টি নিয়মিত মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছে এবং তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতারিত অসংখ্য ভুক্তভোগী প্রতারক দম্পতির বিরুদ্ধে অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অদূর ভবিষ্যতে এইরুপ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।