সকাল নারায়নগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জ মহানগর আ’লীগ নেতৃবৃন্দ’র জরুরী সভায় নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধাণকে বহিস্কারের দাবীর বিপরীতে সাংবাদিক সম্মেলণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে বন্দরের চিতাশাল এলাকায় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলণ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাউন্সিলর দুলাল প্রধাণ বলেন,গত পরশুদিন পত্রিকায় আনোয়ার ভাইকে আমার যে বক্তব্যে ছাপা হয়েছে সেই বক্তব্য আমার না। আমাকে জনৈক সাংবাদিক ফোনে জিজ্ঞেস করেছিল,আপনি সদস্য ফরম পান নাই কেন? আমি তার প্রশ্নের জবাবে মহানগর আ’লীগনেতা হুমায়ুন ভাইয়ের অফিসে ২৩নং ওয়ার্ড আ’লীগনেতা জামান ভাইয়ের কাছে সদস্য ফরম চেয়েছি তিনি বলেছেন আনোয়ার ভাইয়ের নির্দেশনা ছাড়া ফরম দেয়া যাবে না। এতটুকু কথাই হয়েছিল।পরে ওই জনৈক সাংবাদিক অতিরঞ্জিতভাবে আনোয়ার ভাইকে হেয় করে সংবাদ প্রকাশ করে। যা আমার বোধগম্য নয়। এমন মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি আরও বলেন,মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার ভাই প্রবীণ রাজনীতিবিদ,আমার নেতা শামীম ওসমানের রাজনৈতিক গুরু। তাকে নিয়ে কটুক্তি করার কোন প্রশ্নই আসে না। আসলে আনোয়ার ভাইকে নিয়ে যেসব কথাগুলো বলা হইছে সেগুলো বানোয়াট। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
এদিকে আওয়ামীলীগের সদস্য ফরম না পাওয়ার বিষয়ে মহানগর অওয়ামীলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকায় জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল,যুগ্ম সম্পাদক জিএম আরমান,আহসান হাবীবসহ মহানগর আওয়ামীলীগ ২৩নং ওয়ার্ড আ’লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় দুলাল প্রধানের বহিষ্কার ও সাংগঠনিক ব্যবস্থার দাবি তোলা হয়।
মহানগর আ’লীগ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে দুলাল প্রধান বলেন,আমি অনুপ্রবেশকারী না। ১৯৯৩ সাল থেকে তোলারাম কলেজে বাদল-হেলাল পরিষদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। পরে আমি বিদেশে যাই। বিদেশ থেকে ফিরে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছি। আনোয়ার ভাই আমাকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছিলেন। এখন আমি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। আসলে যাদের সদস্য ফরম বিতরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শামসুজ্জামান সাহেব তাদের প্রধান। উনি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এসব বিতরণ করছে। এদের মধ্যে অনেক অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। চাইলে আমি এর প্রমাণও দিতে পারবো।
দুলাল প্রধান বলেন,পুলিশের দাবিকৃত ৫ কোটি টাকা চাঁদা না দেয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। আমাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে অনেকেই আখ্যায়িত করেছেন। বিগত দিনে আমাকে পুলিশ ধরে নিয়েছিল সেখানে সিসি ফুটেজ থাকলে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারতাম। মিথ্যা মামলার হিড়িক পড়েছে নারায়ণগঞ্জে। ওটাও একটা সাজানো মামলা ছিল। পুলিশ বিশাল অঙ্কের একটি টাকা দাবি করেছিল। টাকা না দেয়ায় তারা আমাকে মাদকের সাথে জড়িত করেছিল।
কাউন্সিলর দুলাল বলেন,আপনারা পত্রিকায় দেখছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশের যে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন তার বিরুদ্ধে যে সত্য ঘটনাগুলো আসছে সেরকমই একটার শিকার আমি হয়েছিলাম। আমার কাছে ৫ কোটি টাকা চেয়েছিল। দাবীকৃত টাকা না দেয়ায় আমাকে মাদক মামলা দিয়ে ফাসানো হয়। আমি আমার উকিলের সাথে কথা বলেছি। আমি শীঘ্রই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির নেতা আনসার আলী, হাজী মাইনুদ্দীন,বীরমুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম,দীনেশ চন্দ্র নাসির সরদার প্রমুখ।