সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জকে করোনার “রেড জোন” হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।যেখানে সবাই আতঙ্কে সেখানে নারায়নগঞ্জের এক কাউন্সিলর একের পর এক অন্যরকম উদাহরণ দিয়ে যাচ্ছে।তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৭,৮,৯ নং ওর্য়াড কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা।তারই সহযোগিতায় ৩য় ধাপে আরও এক নবজাতকের জন্ম হলো।
সোমবার (৮ জুন) সকাল ৮ টায় ভুইয়াপাড়ায় এক অসহায় প্রসূতি মায়ের ব্যথা উঠলে দিনার এক ছোট ভাই দিনাকে কল দিলে কাউন্সিলর দিনা সেখানে তার টিম পাঠিয়ে ওই অসহায় মাকে হাসপাতালে নিয়ে এক নবজাতকের জন্ম দেন।
কাউন্সিলর দিনা তার ফেসবুক এক স্ট্যাটাসে জানান,আলহামদুলিল্লাহ আজকেও আমার সার্বিক সহোযোগিতায় জন্ম নিলো আরো একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান।আজ সকাল ৮ টায় ৮ নং ওয়ার্ড ভুইয়া পাড়াতে শিপন ভুইয়ার ফুপাত বোনের বাড়ীর ভাড়াটিয়া অসহায় প্রসূতি মায়ের প্রসব ব্যাথা শুরু হয়।মহিলার স্বামী বোবা এবং দিন মজুর।বর্তমানে মহিলার স্বামী বেকার।
তাদের এখানে আপনজন বলতে কেও নাই।মহিলার প্রসব ব্যাথা শুরু হলে শিপন ভুইয়া সাথে সাথে আমাকে ফোন দিলে আমি অসুস্হ থাকায় সাথে সাথে আমার টিম ঐখানে পৌঁছে দেই এবং আমার টিমের সহায়তায় প্রসূতি মাকে নিয়ে ৮ নং ওয়ার্ড চৌধুরী বাড়ী বাস্ট্যান্ড সংলগ্ন এ আর কমপ্লেক্স মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় আলিফ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এবং আমি আলিফ জেনারেল হাসপাতালের মালিক এমদাদুল হক জসিম হুজুর ভাইকে ফোন দেই এবং বলে দেই আমার টিম এক অসহায় গর্ভবতী নারীকে নিয়ে আসতাছে তার ডেলিভারী করাতে হবে এবং এর জন্য যা খরচ লাগে আমি দিব আপনি শুধু আমার রোগীর ডেলিভারী আলট্রাসনোগ্রাম যা যা করা প্রয়োজন আপনি করেন।
দিনা আরো জানান,পাশাপাশি শিপন ভুইয়াও আলিফ জেনারেল হাসপাতালের মালিক কে ফোন দেয়।আলিফ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা দেখে সত্যিই আমি অভিভুত।তারা রোগীর আল্ট্রাসনোগ্রাম করে বললো আমরা অবশ্যই চেস্টা করবো প্রথমে নরমাল ডেলিভারি করাতে যদি না হয় তাহলে সিজারে যাব, অকারনে সিজার করার দরকার নাই।তখন আলিফ জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার নার্সদের সহোযোগিতায় নরমাল ডেলিভারি করাতে তারা সক্ষম হলো।এবং জন্ম নিলো একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান।
আমাকে সাথে সাথে আলিফ জেনারেল হাসপাতালের মালিক এমদাদুল হক জসিম হুজুর ভাই ফোন দিয়ে বললেন আপা ডেলিভারী সম্পন্ন হয়েছে মা ও সন্তান দুজনই সুস্হ আছে আপাতত।কিছুক্ষণ পরই তাদের বাড়ী নিয়ে যেতে পারবেন। তবে বাচ্চাটার একটু ঠান্ডা আছে সন্ধ্যায় আমাদের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসবে তখন বাচ্চাটাকে দেখাইয়া নিয়া যাইয়েন আর এই মহামারীতে আপনি এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন তাই আমরাও আপনার এই মহৎ কাজের অংশীদার হতে চাই।
তাই আপনাকে এই ডেলিভারির কোন বিল দিতে হবে না।আমরা এইটা এই অসহায় মহিলাকে ফ্রী সেবা দিলাম।সত্যিই পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে বলেই পৃথিবী এখনো টিকে আছে তার প্রমান দিলো আলিফ জেনারেল হাসপাতালের মালিক এমদাদুল হক জসিম হুজুর।। তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নাই।আল্লাহপাকের দরবারে শুধু তার ও তার পরিবারের জন্য দোয়া চাই আল্লাহ পাক যেনো তার রহমতের ছায়া এই মানুষটির উপর সবসময় রাখেন।
নাসিকের এই কাউন্সিলর আরও জানান,আমার নারী টিম অবশেষে মা ও নবজাতককে তাদের বাসায় পৌছে দিয়ে আসে এবং বিকেলে শিশুটিকে নিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে আনব।এছাড়া ও এই মা ও শিশু সহ তার পরিবারের এক মাসের খাবার বাচ্চার দুধ প্রসূতি মায়ের পুষ্টিকর খাবার সহ প্রয়োজনীয় ঔষধ তার বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে।।
পরিশেষে দিনা শিপন ভুইয়া ও আলিফ জেনারেল হাসপাতালের মালিক,ডাক্তার,নার্স সহ সকল স্টাফদের ধন্যবাদ জানান এবং সবাই এই মহামারী তে আপনার আশেপাশের গর্ভবতী মায়েদের একটু খোজ খবর রাখবেন এই প্রত্যাশা করি।
নাসিকের নারী টিমের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,দীপু,ভাতিজা সোয়েব,নাসিমা বেগম,মনি বেগম ও আছিয়া বেগম।