সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
অবিলম্বে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় নিরপক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যাবস্থা চালু, নিত্যপণ্যেও দাম কমানো, সিন্ডিকেট ভাঙ্গা, দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ, অর্থপাচারকারী-ঋণখেলাপি-দুর্নীতিবাজদের শাস্তি এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আজ বিকাল ৪ টায় বাম গণতান্ত্রিক জোট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার উদ্যোগে চিটাগাং রোডে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
কমিউনিস্ট পার্টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাধারণ সম্পাদক দিলীপ দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট মন্টু ঘোষ, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টি নেতা দুলাল সাহা, ইকবাল হোসেন, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, রুহুল আমিন সোহাগ, আনোয়ার খান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জনগণের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। মানুষ এই ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসন থেকে মুক্তি চায়। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে এবং ২০১৮ সালে গভীর রাতে ভোট ডাকাতি করে সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের বিরুদ্ধে অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। সরকার যে সকল নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিচ্ছে তা ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। তারা ইচ্ছামতো দাম ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করছে। আবার সরকার ঘোষিত পণ্য মূল্যের সাথে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের বিস্তর ফারাক। এর কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা জনগণ খুঁজে পাচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের আন্দোলন ও দেশি-বিদেশী নানামুখী চাপে পড়ে সরকার দমনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিল না করে পরিবর্তনের মাধ্যমে কৌশলে একই ধরনের নিবর্তনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে মাত্র আইনটির ধারা জামিনযোগ্য করে, শাস্তির মাত্রা কিছুটা কমিয়ে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনে ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা পুলিশকে দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য উপাত্ত অপসারণ ও ব্লক করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে এত ক্ষমতা আর কোন আইনে দেয়া হয়নি। যা বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের পরিপন্থি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার সংসদে অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩ উত্থাপন করেছে। পাশ হলে শ্রমজীবী মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ধর্মঘট করার অধিকারও কেড়ে নেয়া হবে। গুম, খুন, হামলা, মামলা নির্যাতন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। আবারও ক্ষমতায় আসার ইতিমধ্যে আরপিও সংশোধন করে ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে বর্তমান আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে কালো টাকা, ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।