সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ থেকে সাভার চন্দ্রা রুটে নিয়মিতভাবে চলাচল করে মৌমিতা পরিবহন। আর এই পরিবহনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ ও নিয়মিত যাত্রী সাধারণের অভিযোগের শেষ নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের হাফ ভাড়া নেয়ার কথা বলা হলেও তাদের দেখলেই গেট লাগিয়ে চলাচল করে পরিবহনটি বলছে ভুক্তভোগীরা।
নারায়ণগঞ্জ থেকে এই একটি পরিবহনের ১২০ টির বেশি গাড়ি চলাচল করে। যার মধ্যে চাষাড়া প্রবেশের জন্য মৌমিতার ৩০টি বাসের অনুমোদন নেয়া হলেও চলছে ১২০ টির বেশি বাস।
নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড পর্যন্ত পরিবহনটির রুট পারমিট থাকলেও আইন অমান্য করেই প্রবেশ করছে শহরের কেন্দ্রবিন্দু চাষাঢ়া হয়ে মেট্রোহল এলাকায়। তাই এখন মনে হয় যেন শহরের মেট্রোহল এলাকাটি যেন মৌমিতা পরিবহনের গাড়িগুলোর দখলে। নিজস্ব স্টার্ন্ড মনে করেই অবৈধভাবে প্রবেশ করে সড়কের মাঝখানেই পার্কিং করছে ও সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করছে। কোন কাউন্টার নেই কিন্তু আবার কয়েকটি স্থানে অবৈধভাবে কাউন্টার বানিয়ে বাস থামিয়ে যেখানে সেখানে উঠানামানো করাছে যাত্রী। অপরদিকে যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ মাত্রাতিরিক্ত করায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
মৌমিতা পরিবহনের চালক ও হেলপারদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, সারাদিনে মাত্র দুই ট্রিপ আপ-ডাউন করতে পারি আবার অনেক সময় তাও হয় না।
তাই একটু বেশি যাত্রী নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলে গেট লাগিয়ে দেন কেন? এমন প্রশ্ন করলে তারা বলে ছাত্র-ছাত্রী নেই কিন্তু কম। কারন এমনিতেই আমাদের ট্রিপ কম হয় তার মধ্যে যদি আবার ছাত্র-ছাত্রী বেশি নেই তাহলে আমাদের ইনকাম কম হয়। তাই ছাত্র-ছাত্রী কমে নিয়ে সাধারণ যাত্রী বেশি নেই।
যাত্রীরা বলছে, গাড়িতে সীট ও ফাকা স্থানে ঠাসাঠাসি করে যাত্রীদেরকে জোর করে উঠিয়ে ভোগান্তিতে ফেলে। পুরুষ দারানোর জায়গা থাকে না তার উপর আবার সীটে বসানোর আস্সাস দিয়ে মহিলাদের কে উঠায়। আর উঠে যখন সীটে ফাঁকা না থাকে তখন বলে সামনে গেলে খালি হচ্ছে যাবে এখন একটু দারান। যাত্রীরা আরো বলেন ভাড়া তো আর কম নেয়না বরং বেশি রাখে। বেশি রেখেও সাধারণ যাত্রীদেরকে ভোগান্তিতে ফেলে।
মেডিকেল পড়ুয়া ছাত্ররা বলেন, আমরা মেডিক্যালের ছাত্র। হাসপাতালে ইন্টার্নি করছি। রাত ১০টায় গাড়িতে উঠেছি বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে কিন্তু গাড়ির কন্টাক্টরকে হাফ ভাড়া দেয়ার পরও সে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ ও বাজে ভাষায় গালাগালি করে। আমাদের আইডি কার্ড দেখানোর পরও খারাপ ব্যবহার করে। স্টুডেন্ট দেখলেই তারা গেট লাগিয়ে দেয়।
শরীফ নামের এক যাত্রীর সাথে কথা বলে তিনি সাংবাদিককে জানান, গাড়িতে সীট হলো ৪৫ জনের আর তারা যাত্রী নেয় ৭০ থেকে ৮০ জনের বেশি। আর যাত্রী নামানোর সময় হেলপার দেখেইনা যে গাড়িতে জায়গা আছে কিনা। একদিকে দারানোর জায়গা নাই আরেক দিকে নামতে দেরি হলেই অতিরিক্ত চেচামেচি করে।
সরজমিনে পর পর ৪ দিন মৌমিতা পরিবহনে চলাচল করে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিয়েই শহরের চাষাড়া মোড় ও সান্তনা মার্কেটের নিচে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নেয়া হচ্ছে। রাস্তা ফাঁকা থাকলেও একই পরিবহনের অন্য গাড়ি দেখলেই রাস্তার মাঝখানে আড়াআড়ি ভাবে রেখে যাত্রী উঠানো ও রাস্তায় যানজট লাগাতে দেখা যায়। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের তর্ক বির্তক ও খারাপ আচরণ লক্ষ্য করা যায়। সীট ফাঁকা ও গাড়িতে জায়গা না থাকার পরও এক প্রকার জোর করেই মহিলা যাত্রীদের উঠানো হচ্ছে। গেটের সামনে সামান্য ফাঁকা স্থানে অতিরিক্ত সীটের ফোমের মধ্যেও যাত্রী বসিয়ে নিতে দেখা যায়।
এবিষয়ে মৌমিতা পরিবহনের চেয়ারম্যান কালু শেখ বলেন, আমাদের পরিবহনটি লোকাল বাস, সিটিং বাস নয় তাই যাত্রী একটু বেশি নেয়া হয়।