সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
সাভারের উলাইল হতে ১০ বছরের শিশু অপহরণের ৫ দিন পর মানিকগঞ্জের নবগ্রাম হতে শিশুটি উদ্ধার করেছে র্যাব-৪ ও অপহরণকারী চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার।
এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি মনুষ্য অপরহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারা যায় যে, ২৩ এপ্রিল বেলা ১১টার সময় ঢাকা জেলার সাভারের উলাইল এলাকা থেকে ১০ বছরের শিশু ইসতেফাত হোসেন সোহান অপহৃত হয়। উক্ত ঘটনার পরের দিন অপহরণকারী চক্র শিশুটির পরিবারের নিকট ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং টাকা না দিলে অপহৃত শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিলো।
প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত ১০টা হতে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ জেলার নবগ্রাম এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে মুক্তিপণ আদায়ের কাজে ব্যবহৃত ০৩ টি মোবাইলসহ অপহৃত শিশু ইসতেফাত হোসেন সোহান’কে উদ্ধারপূর্বক নিম্নোক্ত ৩ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোঃ করিম বেপারী (২৯), জেলা- মানিকগঞ্জ, মোঃ বাদশা @রাজা (৩৫), জেলা-মানিকগঞ্জ ও মোঃ হাবু মিয়া (৪৫), জেলা-মানিকগঞ্জ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, অপহরণকারীরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র এবং দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা জেলার আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই থানা এলাকাসহ আশপাশ এলাকা হতে শিশুদের বিভিন্ন লোভনীয় খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে এবং বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে অপহরন করে আসছে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ এপ্রিল সকাল ১১ টার সময় অপহরণকারী চক্রের কয়েকজন সদস্য শিশুটিকে বিভিন্ন লোভনীয় খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে সাভার থানাধীন উলাইল এলাকা হইতে অপহরন করে মানিকগঞ্জের নবগ্রাম এলাকার একটি অজ্ঞাতনামা বাসায় নিয়ে যায়।
শিশুটি উক্ত স্থানে পৌঁছানোর সাথে সাথে অপহরণকারীরা তার হাত ও চোখ-মুখ বেঁধে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের’কে শিশুটির মারধরের শব্দ, কান্নার চিৎকার শুনিয়ে ৫,০০,০০০/- টাকা মুক্তিপন দাবি করে এবং মুক্তিপণের টাকা না দিলে শিশুটিকে হত্যা করার হুমকি দিতে থাকে। ইতোমধ্যে শিশুটির মামা ও মামি পর্যায়ক্রমে তাদের দেওয়া বিভিন্ন মাধ্যমে কিছু পরিমাণ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে পাঠায়।
শিশুটিকে উক্ত স্থানে গত ২৩ এপ্রিল দুপুর দেড়টা হতে আটক রেখে মুক্তিপণের বাকী টাকা আদায়ের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার করে আসছিল। উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।