সকাল নারায়ানগঞ্জঃ কত না সাধারণ থেকে ভিআইপি মানুষের মানবেতর জীবনের বাস্তব গল্প হাজারো কিংবা লাখো-কোটি মানুষের কাছে পৌছে দেয় সংবাদকর্মীরা। কোথাও বাবা মায়ের জন্য সন্তানের কাঁন্না, কোথাও সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের কাঁন্না। অনুসন্ধানের মাধ্যমে খুঁজে বের করে অসহায়, অবহেলিত, নির্যাতিত বঞ্চিত সেই মানুষগুলোকে। সংবাদ পত্রের মাধ্যমে তুলে ধরে স্বজনদের আর্তনাদ। সন্তানাদীর করুন বেদনা।
ফলশ্রুতিতে, কারো না কারো মিলে যায় উচ্চতর
চিকিৎসা সেবার সহযোগীতা, কারো অনুদান, কারো বা পাল্টে যায় জীবন!
এইতো কিছুদিন আগে সকলের দোয়ায় সাংবাদিক মাহমুদ হাসান কচি ভাইয়ের
সফল ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে যেন নতুন জীবন পেল। কিন্তু আজ এমনই
অসহায় হয়ে দূরঅবস্থার দাড়প্রান্তে আমাদেরই আরো এক সহকর্মী। তবে
সাংবাদিকদের এমন কান্না কার-ই-বা কি যায় আসে! একটা সময় অবিরাম যে
ছুটে চলেছে ( রাজণীতিবীদ, এমপি, মেয়র, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও
নেতাকর্মীদের ) ভালো কোন সংবাদের জন্য ছবির পিছনে। আজ কয়জনই বা আছে,
তার পিছনে?কে ই বা রেখেছে তার খবর? কারণ সংবাদকর্মীদের প্রয়োজনটাই
তো এমন!
হ্যাঁ, আজ আমাদেরই এক সহকর্মী (সিনিয়র ফটো সাংবাদিক) যার নাম মেহেদী হাসান নয়ন। সে বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জ শাখা’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল টাইমস নারায়ণগঞ্জ এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশার বাহিরেও আমি দীর্ঘ সময় একসাথে সময় কাটিয়েছি। এরপর যখন পোর্টালটি শুরু করা হয়, তখনও আমাকে তার গুরু দায়িত্ব থেকে সরাইনি। পারিবারিক অনেক কাজেও বিশ্বস্ততার সহিত নিজ ভাইয়ের মত পাশে থেকে বহুপথ হেটেছি, গিয়েছি তার শ্বশুরালয় থেকে নানি বাড়ি, ব্রাহ্মনবাড়িয়া। তার মা যখন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়। একদিন ভার্সিটি শেষ করে হাসপাতালে যাই। তার মায়ের ওইদিনের একটুখানি আদর, এখনো আমি ভুলিনি। কিন্তু বিধাতার ইচ্ছাতো মাথা পেতে মেনে নিতে হয়। কিছুদিন পরেই মারা যান তিনি। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুক, আমিন।
আজ কিভাবে যেন সেই মরণব্যাধি ক্যন্সারটাই সাংবাদিক নয়ন ভাইয়ের জন্য নির্ধারিত হল, তা আল্লাহ পাকই ভালো জানেন। তার ছোট একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে, ভাবতেই চোখে পানি চলে আসে। যে তার বাবাকে নিয়ে অনুপ্রেণিত হত, খেলায় কাটাতো সারাটা বেলা। আজ কতদিন ধরে সেই বাবাবাকে চোখেও দেখছেনা। দেখবেই বা কিভাবে, তার বাবা তো বেড এ শুয়ে শুয়ে কাতরিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। সে চাইলেও আজ ছেলেকে পাশে রাখতে পারছেনা।
এখন শুধু একটাই উপায় তা হল সকলের বিশেষ দোয়া। একমাত্র আল্লাহ চাইলে আবারো নয়ন ভাই আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারে। তাছাড়া ব্যয়ববহুল চিকিৎসার সার্বিক প্রচেষ্টা চলছে। আপাতত ফিটেস্ট করার জন্য বাংলাদেশে কিছু চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা থাকলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজে ওই ওয়ার্ডে বেড বুকিংয়ের সিরিয়ালও প্রায় শতাধিক। আর সেই সৌভাগ্য হাসিলেও প্রয়োজন টাকার পাশাপাশি, এমন এক মামা- খালু (এমপি/মন্ত্রি) সুপারিশ। তাহলেই সম্ভব, কারণ বাংলাদেশেও চিকিৎসা রয়েছে। তবে সুযোগ পাওয়া অসাধ্যকর। তারপরেও দোয়া করবেন চেষ্টা চলছে। আর কেউ যদি কোনভাবে এ সুযোগ করে দিতে সহযোগীতায় এগিয়ে আসেন, স্বাগতম। কৃতজ্ঞ থাকবো।
এরমধ্যে নয়ন ভাইয়ের কাছ থেকে ধার নেয়া টাকাগুলো ফেরত দিচ্ছে না কতিপয় ব্যাক্তি। আশা করি এমন সময় আল্লাহ উনাদেরকেও হেদায়েত ও বিবেক বিবেচনা বৃদ্ধি করবে।
( বি.দ্র. : একান্তুই অগুছানো ব্যক্তিগত মতামত, ভুলগলো ক্ষমাসুলভ দেখার অনুরোধ থাকবে। )