1. [email protected] : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. [email protected] : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক এমপিরা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল - সকাল নারায়ণগঞ্জ
বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
২০২৪ সালে সড়কে ঝরেছে ৬ হাজার ৪৪৪ প্রাণ গাজী টায়ারস কারখানায় হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা সড়ক অবরোধ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী বিরোধী বক্তব্য দিয়ে নিজেই চাঁদাবাজ সোহাগের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা নিলেন সাখাওয়াত-টিপু অ্যাম্বুলেন্স ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারীর মৃত্যু আহত ৫ জনবাণী সম্পাদক শফিকসহ সাংবাদিকদের উপরহামলার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত পাওয়ার সল্যুশনের সমৃদ্ধিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে এনার্জিপ্যাক ও পারকিন্স সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করল ইসলামী আন্দোলন টাচ্ স্টোন এডুকেশন হোম স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল এবং মেধাবৃত্তিক পুরস্কার বিতরণ  আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক এমপিরা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক এমপিরা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৪ Time View

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ

আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের শাসনামলে সাবেক এমপিরা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। সামাজিক, শিক্ষা, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ধরণের প্রতিষ্ঠানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিলেন। একই দশা ছিল নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর। এখানকার প্রত্যেকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগের সাবেক দুই প্রভাবশালী এমপির কব্জায় ছিল। সংগঠনগুলোর শীর্ষ পদে শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের অনুসারীরা বাদে বাকিরা লড়াই করার কোনো সুযোগ পেতেন না। তারা যাদের নির্ধারণ করে দিবেন তারাই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতো। অর্থাৎ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো দুই ওসমানের নিজের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোতে গত এক দশকের বেশী সময় ধরেই হতো না নির্বাচন। আর যাও হতো তা ছিল লোকদেখানো। তবে গত ৫ আগস্ট প্রেক্ষাপট পাল্টে যাওয়ার পর থেকে সংগঠনগুলোতে নির্বাচনী বাতাস বইতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে কয়েকটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। বাকিগুলোতে খুব শিগগিরই হবে এমনটাই শোনা যাবে। তবে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পরে এবার আর লোকদেখানো নির্বাচন নয় বরং নতুন বছরে আমেজপূর্ণ উৎসবমুখবর ও সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ ফিরে ফেতে চান ব্যবসায়ীরা।  

তবে এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয় নি। পাশাপাশি সংগঠনটির সভাপতি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। গত ২৮ নভেম্বর বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী আচরণ এবং অনৈতিক কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদ ও পরিচালক খুরশীদ আহমেদ তানিম পদত্যাগ করেন। তাদের অভিযোগ ছিল, “আমরা লক্ষ্য করেছি যে বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটছে যা আমাদের আমাদের সংগঠনের মূলনীতি-ন্যায়পরায়ণতা, সততা এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে লঙ্ঘন করছে।” গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাতে সংগঠনের এ দুই পরিচালক বলেন, “বর্তমান সভাপতি এবং কিছু সিনিয়র বোর্ড সদস্যরা ফ্যাসিজমকে সহযোগিতা করেছে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও সাধারণ ছাত্র-জনগণের ওপর নির্যাতনকারী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন।” তারা আরও বলেন, “মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এবং আমাদের বিবেকের তাড়নায়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যারা এই ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করে, তাদের সঙ্গে আর কাজ করব না।” 

এদিকে গত ২১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজে প্রশাসক নিযুক্ত করা হতে পারে এমন মর্মে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। প্রশাসক বসতে পারে এমন শঙ্কা থেকে দ্রুত নির্বাচনের পথে হেঁটেছে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের বর্তমান পর্ষদ। সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স¤প্রতি ২৩ নভেম্বর চেম্বার অব কমার্স ভবনে ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচন আপিল বোর্ডের প্রথম যৌথ সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্তে জানানো হয়, যেসব প্রতিষ্ঠান ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০২৪ সালের বকেয়া চাঁদা, হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স ও আয়কর প্রত্যয়ন পত্র জমা প্রদান করবে শুধু সে সকল প্রতিষ্ঠানই ভোটার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হবে। ইতোমধ্যে বাণিজ্য সংগঠন এর নির্বাচন বিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ নির্বাচন তফসিল প্রণয়ন করা হয়েছে। 

এদিকে গত ১৪ নভেম্বর হোসিয়ারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০২৫-২০২৭ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি হোসিয়ারি সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর গত ৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হোন এম সোলায়মান। সেই সঙ্গে মোহাম্মদ মুসাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়েছে। তবে অঘোষিতভাবে এখনো বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পদে রয়েছেন প্রবীর কুমার সাহা। যিনি ওসমান পরিবারদের অন্যতম দোসর হিসেবে পরিচিত। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) টানা ১৪ বছর ১ মাস সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন সেলিম ওসমান। ২০১০ সালের ২২জুলাই প্রথমবারের মতো বিকেএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই সময়ে সদর ও বন্দর আসনের এমপি বড় ভাই নাসিম ওসমান এবং ফতুল্লা আসনের এমপি চাচী কবরী সারোয়ার ছিলেন। সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে সদর ও বন্দর আসনে উপ-নির্বাচনে এমপি সেলিম ওসমান। এমপি ক্ষমতার সুবাধে বার বার সভাপতি হওয়ার জন্য বিকেএমএই নিয়মও পরিবর্তন করেছেন। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকার পতন হয়। পরে ২৫ আগস্ট সংগঠনটির এক জরুরি বোর্ড সভায় ১৪ বছর যাবৎ সভাপতি সেলিম ওসমান ব্যক্তিগত কারণ ও অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে তার সভাপতি ও বোর্ড পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার স্থলে নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমকে সভাপতি দায়িত্ব দেন বোর্ড। তিনি এই সংগঠনের ১নং সদস্য এবং তিনি ডিসেম্বর ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন মেয়াদে সহ-সভাপতি এবং সর্বশেষ দেড় মেয়াদে নির্বাহী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব ছিলেন। জরুরি বোর্ড সভায় ফতুল্লা অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে শামীম নির্বাহী সভাপতি এবং মাইক্রো ফাইবার গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শামসুজ্জামানকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তারা সকলেই বিদায়ী সভাপতি সেলিম ওসমানের বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচয় রয়েছেন। নবগঠিত পরিচালচনা পর্ষদে সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মনসুর আহমেদ। সহ সভাপতি হিসেবে আছেন অমল পোদ্দার, গাওহার সিরাজ জামিল, মোরশেদ সারোয়ার সোহেল সহ-সভাপতি (অর্থ), আখতার হোসেন অপূর্ব, মোহাম্মদ রাশেদ।

আর নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ দীর্ঘ সময়ে দখল রেখেছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। বিএনপির সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী বাদ দিয়ে সভাপতি চেয়ারে বসেন সেলিম ওসমান। এরপর থেকে টানা সভাপতি থেকে থামেন ২০১৮ সালে। ওই বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তার স্থলে বসেন তার খালেদ হায়দার খান কাজল। চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক (২০১৮-২০২০) নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হন তিনি। অসুস্থ অবস্থা নিয়ে তিনি ৬ বছর ২ মাস দায়িত্ব শেষে গত ৪ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগ করেন। চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর (২০২৩-২০২৫) মেয়াদও সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল ও সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভ‚ঁইয়া সাজনু ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের মাধ্যমে তাদের এই পদত্যাগ করেন বলে জানা যায়।  

তাদের শূন্য পদের জন্য কো-অপ্ট করে প্রথমে পরিচালক হিসেবে মডেল ডি ক্যাপিটাল ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুজ্জামান নির্বাচিত করে নতুন সভাপতি দায়িত্ব দেয়া হয়। সাজনুর স্থলে পরিচালক সোহেল আক্তারকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। জরুরি সভায় নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরশেদ সারোয়ার সোহেলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, রতন কুমার সাহা, মাহবুবুর রহমান, মহসিন রব্বানী, তারেক সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ আবু জাফর, মো. সেলিম হোসেন, সোহেল আক্তার, আশিকুর রহমান, মো. জাকারিয়া ওয়াহিদ। উপস্থিত ছিলেন না ছাত্র-জনতা হতাহত মামলার আসামী ও চেম্বারের পরিচালক মো. নাজমুল আলম সজল, ইমতিনান ওসমান অয়ন, মো. এহসানুল হাসান নিপু। তবে সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের পরিচালক পদ বাতিল করা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী তারা এখনো চেম্বারের পরিচালক। সবশেষ চেম্বারের সভাপতি এক বিতর্কের জন্ম দেন। সঙ্গে ছিলেন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমও। তারা দুইজন জানান ৫ আগস্টের পর তাদের কাছ থেকে নেওয়া ৮ লাখ টাকার চাঁদা পরে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যে কারণে ব্যবসায়ীরাও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশ চান। ব্যবসায়ীরা যাতে নির্ভয়ে নিজের পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে পারেন সেই পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি সাধারণ ব্যবসায়ীদের।

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL