সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা ও কদমরসূল (বন্দর) পৌরসভা বিলুপ্ত করে ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হয়। সেই হিসেবে শহর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা স্বাভাবিকভাবেই মহানগর অংশের আওতাভুক্ত। তবে, বিএনপির আওতাধীন যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, মহিলা দলসহ ১১টি অঙ্গ সংগঠনের মহানগর কমিটিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা অন্তর্ভূক্ত থাকলেও রহস্যজনক কারণে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপিকে মহানগর বিএনপির আওতাভুক্ত না করে জেলা বিএনপির আওতাভুক্ত করা হয়। তাই জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে মহানগর বিএনপির আওতাভুক্ত করার দাবি জানায় নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৪ এর (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা/থানা, পৌরসভা, মহানগর, জেলা- এই শব্দগুলো বাংলাদেশ সরকার/ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দেওয়া অর্থই বুঝাবে।’ অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত এসব এলাকা নিয়েই বিএনপির কমিটি গঠন করতে হবে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মহানগরীর মুল এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং থেকে ১০নং ওয়ার্ড পর্যন্ত এলাকা জেলা বিএনপির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যেখানে মহানগর কমিটিতে রাখা হয়নি। আর সিটি কর্পোরেশন গঠন করেন সরকার এবং এখানে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আয়োজন করেন। ফলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে মহানগর বিএনপির আওতাভুক্ত না করায় সুস্পষ্টভাবে দলের গঠনতন্ত্রের ব্যতয় ঘটেছে।
এ বিষয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা বলছে, বিএনপির গঠনতন্ত্র মোতাবেক সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত ওয়ার্ডসমূহ মহানগরের অধীনে থাকার কথা। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনও এ নিয়মে তাদের কমিটি গঠন করে থাকে। কিন্তু জেলা বিএনপি মহানগরের সে অধিকার কেড়ে নেওয়ায় তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় এবার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা বলছে, বিগত সময়ে যে ভুল হয়েছে, তা শুধরে অচিরেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে মহানগর বিএনপির আওতাভুক্ত করা হোক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির আওতাভুক্ত সকল সহযোগী সংগঠনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকাকে মহানগরের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দরাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে থাকে। শুধুমাত্র বিএনপির বেলায়, এই থানাকে মহানগর থেকে আলাদা করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
উল্লেখ, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কমিটি জেলা বিএনপির অন্তর্ভূক্ত করায় ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি গুলজার হোসেন খান। সে মামলায় বিএনপির মহাসচিব মীর্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালকে বিবাদী করা হয়েছিলো। মামলার আবেদনে বলা হয়েছিলো, গত ১০ আগস্ট অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহবায়ক করে অবৈধভাবে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। মামুন মাহমুদ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ১০ টি ওয়ার্ড কর্তন করে বে-আইননিভাবে জেলায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণায় অপচেষ্টা লিপ্ত রয়েছে।