রূপগঞ্জের ভুলতায় অবস্থিত রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী মালিককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি এবং নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পূনর্বাসনের দাবিতে রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে আজ বিকাল ৫ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আফজাল হোসেন, রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক এস.এম.কাদির, রি-রোলিং স্টিল মিলস্ শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী, জেলা কমিটির সদস্য রেজাউল, তারু।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, রূপগঞ্জের ভুলতায় অবস্থিত রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডে চুল্লি বিষ্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ইতিমধ্যে ৬ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছে। ২ জন আশঙ্কাজনকভাবে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী ইন্সটিটিউটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্টিল এবং রি-রোলিং মিলগুলোতে যে ধরণের সেফটি ব্যবস্থা থাকা দরকার, শ্রমিকদের সেফটি পোশাক থাকার কথা এর কোনটাই এখানে ছিল না।
অগ্নি নির্বাপনেরও কোন ব্যবস্থা ছিল না। ছাড়পত্র ছিল না বলে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর জানিয়েছে। বাস্তবে মালিকের অতি মুনাফার লোভ, অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এটাকে দুর্ঘটনা বলা যায় না, এটা হত্যাকাÐ। অবিলম্বে মালিককে গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রানাপ্লাজা ট্রাজেডি। সারা বিশ^কে নাড়া দিয়েছিল। সরকার অনেক ধরনের কমিটি করেছে। কলকারখানা অধিদপ্তর সম্প্রসারিত করা হয়েছে। মানুষের প্রত্যাশা ছিল এরপরে কারখানায় মালিকের অবহেলায় মৃত্যু বন্ধ হবে। কিন্তু এরপরও টাম্পাকো ফয়েল, সেজান জুস, বিএম কন্টেনার ডিপোসহ ছোট বড় অনেক কারখানায় বহু শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রানাপ্লাজার ঘটনার ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।
কোন ঘটনারই বিচার কাজ সম্পন্ন হয়নি। রানাপ্লাজার ভবন মালিক ছাড়া কেউ কারাগারে নেই। ২০০৬ শ্রম আইনে কর্মস্থলে মৃত্যু হলে শ্রমিকের ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ বিধান ছিল, ২০১৮ সালে শ্রম আইন সংশোধন করে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ করা হয়েছে। মালিকের অবহেলায় মৃত্যু হলে কখনও ক্ষতিপূরণ এটা হতে পারে না। মালিকের অবহেলায় শ্রমিকের মৃত্যু হলে আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী আজীবন আয়ের মানদÐে ক্ষতিপূরণের বিধান করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ রহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেডে শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য মালিককে অবিলম্বে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি, নিহতদের আইএলও কনভেনশন মোতাবেক আজীবন আয়ের সমান মানদÐে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি করেন। একই সাথে নেতৃবৃন্দ কারখানা দেখভাল করার জন্য নিয়োজিত সরকারি কতৃপক্ষের দায়িত্বরতদের ব্যাপারেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।