সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রীর নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ফেসবুকে পোস্ট করে খাবির হোসেন (৪০) নামে এক যুবক আত্মাহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় মৃত খাবির হোসেনর স্ত্রী অভিযুক্ত মুক্তি (৩২) এবং তার শ্বাশুড়ি লতিফা (৫৫) কে আটক করা হয়।
এই বিষয় নিহতের বাবা আমিনুল হক রোববার (১২ মার্চ) সাড়ে ১১টায় সিনামুন রেস্টুরেন্ট এ এক সংবাদসম্মেলনে অভিযোগ তুলেন তার ছেলে খাবির হোসেনকে তার স্ত্রী ও তার শ্বশুড়বাড়ির পরিবারে লোক হত্যা করেছে।
এবিষয় তিনি সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল হক বলেন, হত্যার ঘটনার আগের দিন ৮ ফেব্রুয়ারীতে খাবির তার স্ত্রী ও শ্বাশুড়ি দ্বারা নির্যাতনের কথা স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে কয়েকটি পোস্ট করেছিল। পোষ্ট করার পর সেই পোষ্টকৃত মোবাইলটি খাবির হোসেনের মেয়ে খাদিজা মোবাইল থেকে পোষ্টটি ডিলেট করে দেয়। আত্মহত্যার আগের দিন ৮ ফেব্রেুয়ারীতে ৯ টার সময় খাবিরুলের স্ত্রী মুক্তি, তার মেয়ে খাদিজা, তার শাশুরি লতিফা ও লতিফার ভাই রমজান খাবিরুকে পাগল আখ্যায়িত করে মারধর করে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়। পরে খাবিরুলকে পুলিশ ধরে নিয়েছে এই বিষয়ে খাবিরুলের স্ত্রী আমাকে জানায়। অতঃপর ঘটনার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ থেকে রাত ৩ টার দিকে কে বা কাহারা খাবিরুলকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হইতে ছাড়াইয়া নিয়ে আসে। এ বিষয়ে খাবিরুলেরে মেয়ে খাদিজার কাছে জানতে চাইলে খাদিজা এই বিষয় কিছুই জানে না বলিয়া অস্বীকার করে।
নিহতের পিতা আরো বলেন, আমার ছেলে খাবিরুলকে হত্যার পিছনে তার অন্যতম কারণ মেয়ে খাদিজার লজিং মাষ্টারের সাথে স্ত্রীর পরকীয়া ও মেয়ের খাদিজার খালাতো ভাইয়ের প্রেমের বাধা ও তার জমি নিয়ে ঝামেলা চলে আসছিলো দীঘদিন ধরে। পরবর্তীতে আমি আমার ছেলে স্ত্রী, মেয়ে ও শ্বাশুড়ীর সাথে মোবাইলে ফোনে বহুবার যোগাযোগ করার চেস্টা করলে তারা কেউ আমার ফোন রিসিভ করে নাই। ৯ ফেব্রেুয়ারি দুপুরে আমি খাবিরুলের মেয়ের সাথে কথা বললে সে জানায়, খাবিরুল এক মুঠো ঘুমের ঔষুধ সেবন করে ঘুমাইতেছে। খাবিরুলকে ঘুম হইতে উঠানোর জন্য মোবাইলে বার বার বললেও তারা আমার সাথে তালবাহানা মূলক কথাবার্তা বলা সহ বলা সহ আমার ছেলে ঘুম হইতে উঠেনা মর্মে জানায়। এক পর্যায়ে বিকেলের দিকে খাদিজাকে মোবাইল করলে সে কান্নাকাটি করা সহ আমার ছেলে খবিরুলকে ঘুম হইতে উঠানোর জন্য দরজা ভাঙ্গার কথা বললে বলে তারা বাসায় নাই, আমার ছেলেকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবার পর আমরা অন্যত্র চলে আসছি বলে আমাকে তারা জানায়। সন্ধ্যার দিকে জানতে পারি যে আমার ছেলে নাকি আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ছেলের শ্বাশুড়ি লতিফা (৫৫), স্ত্রী মুক্তি (৩২) রমজান (৪০) ও লুৎফর রহমানকে (৪০) অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ মুক্তি ও তার মাকে আটক করে। আমার ছেলে পাগল হতে পারে না। আমার ছেলে সিএনজি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। আমার ছেলের স্ত্রী ও তার মেয়ের প্রেমের সর্ম্পকের বিষয় ও জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ছেলের স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে প্রায় ঝগড়া হতো। আমার ছেলেকে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। যা আমরা ছেলে খবির হোসেন তার আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোস্ট করে জানিয়েছে। আমি আমার ছেলের আত্মহতার প্ররোচনারকারী হিসাবে তার স্ত্রী, শ্বাশুড়িসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।