এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপনের ফলে ৯৬.৪৫% এলাকাবাসী সন্তুষ্ট এবং ৮৭.৭৮% নিয়মিত কৃষকের বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করেন। অন্যদিকে ৫৬.৬৪% কৃষক, কৃষকের বাজারে পণ্য বিক্রি করে অধিক লাভ পান বলে জানান।
কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের উপকার বিবেচনায় একটি পৃথক ডেস্কের মাধ্যমে বাজারগুলো স্থায়ী হওয়া প্রয়োজন। আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সকাল ১০.০০ টায় রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা মহানগরের ১৬ টি কৃষকের বাজার স্থায়ীকরণের কৌশল নিরূপণে আয়োজিত মেট্রোপলিটন লেভেল স্ট্র্যাটেজিক মিটিং এ বক্তারা এ কথা বলেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামানের সভাপতিত্বে আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার।
উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান।
আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো, ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকনউদ্দিন আহমেদ।
স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, কৃষকের বাজারে নিরাপদ পণ্য নিশ্চিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে সচেষ্ট হতে হবে।
বাজারগুলো টেকসই করে তুলতে কাউন্সিলরদের ওয়ার্ড কমিটির সভায় এ বিষয়টি থাকতে হবে। এক বছরের জন্য বাজারগুলো চলমান রাখতে একটি সুনির্দিষ্ট বাজেটের জন্য সিটি কর্পোরেশনের কাছে সুপারিশ করা যেতে পারে। তারপর কৃষকদের পণ্যের দামের সাথে পরিবহন খরচটি ধরে কৃষকদের মাধ্যমেই পরিবহন খরচ ব্যয় করতে হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামান বলেন, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় কৃষকের বাজারের জন্য একটি পৃথক ডেস্ক নিশ্চিতের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এটি খুব দ্রুত কার্যকর হবে। যখন ডেস্ক তৈরি হবে তখন বাজেটও বরাদ্দ হবে। প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও আমাদের কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, অধিকাংশ কৃষক এবং ভোক্তা কৃষকের বাজার চলমান রাখার বিষয়ে আগ্রহী। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্প থেকে আমরা একটি ব্যতিক্রমী বাজারের সূচনা করেছি, যার মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি পরিবেশের উপরও ইতিবাচক প্রভাব রাখা সম্ভব হয়েছে।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন বলেন, চারটি সিটি কর্পোরেশনে অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালা থেকে আমরা ১৬টি কৃষকের বাজার টেকসই করার বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশ পেয়েছি। সেই সুপারিশগুলোর উপর ভিত্তি করে কৃষকের বাজার টেকসই করার কৌশল নিরূপণই আজকের মিটিং এর মূল উদ্দেশ্য।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কৃষকের বাজারের মাধ্যমে স্বল্প পরিসরে হলেও জনগণের কাছে নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ কার্যক্রমটি আরো বিস্তৃত করার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আমাদের সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল বাশার, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন মোল্লা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন, এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ নজরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর শরীফা পারভীন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর শহীদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ আনোয়ারুল ইসলামসহ আরো অনেকে।