নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার শিমরাইল এলাকার এ্যাপলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেড কারখানার চাকুরিচ্যুত শ্রমিক কর্মচারীদের আইনগত পাওনাদী পরিশোধের দাবিতে চাষাড়া শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে অর্ধশতাধিক শ্রমিক কর্মচারী।
এ্যাপোলোর শ্রমিক আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ‘টিইউসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাফিজুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য এম এ শাহীন, নুর ইসলাম আক্তার, এ্যাপোলোর শ্রমিক আওলাদ হোসেন, বানু বেগম ও রাজিয়া বেগম প্রমুখ ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এ্যাপলো ইস্পাতের শ্রমিক কর্মচারীরা বছরের পর বছর এ কারখানায় কাজ করেছে। অনেকের পুরো জীবনটাই এখানে কাটিয়ে দিয়েছে। তাঁদের শ্রম ঘাম নিয়ে মালিক কোটি কোটি টাকা মুনাফা করেছেন। হঠাৎ করে গত ১৬ জুলাই ২০২২ কারখানাটি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শ্রমিক কর্মচারীরা তাঁদের পরিবার স্বজন নিয়ে চরম বিপদে পড়েছে। বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দৈনন্দিন জীবনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বর্তমান সময়ে শ্রমজীবি মানুষ যা আয় করে তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না। এই দুরাবস্থার মধ্যে এ্যাপোলো কারখানা মালিক ২১৪ শ্রমিক কর্মচারীকে চাকুরিচ্যুত করে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। চাকুরিচ্যুতদের মধ্যে বড় অংশ শ্রমিককেই বকেয়া পাওনার সাথে সামান্য আইনি পাওনা দিয়ে না-দাবি নামায় জোরপূর্বক সাক্ষর নিয়ে বিতারিত করছে। অবশিষ্ট ৫০ জন শ্রমিক কর্মচারীর আইনগত পাওনাদী পরিশোধ করছে না। নানান টালবাহানায় হয়রানি করছে। ফলে চাকুরিচ্যুত শ্রমিক কর্মচারীরা পরিবার স্বজন নিয়ে আধ পেটা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ইতিমধ্যে তাঁদের বকেয়া বেতন-ভাতাও আন্দোলন করেই আদায় করতে হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো শ্রমিক-কর্মচারীর চাকুরির ক্ষতিপূরণ (সার্ভিস বেনিফিট) পরিশোধ করে নাই। তাঁদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
এ্যাপোলো শ্রমিক কর্মচারীদের সংকট নিরসনের জন্য রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল দপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোন প্রকার ষড়যন্ত্র করে শ্রমিক কর্মচারীদের আইনি পাওনা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। অবিলম্বে আইনগত সকল পাওনা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন অব্যাহতভাবে চলবে। পর্যায়ক্রমে কঠোর থেকে আরও কঠোরত আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করার হুঁশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।