শারীরিক ও মানুষিক বিকাশ যে শুধু পড়া লেখার মাধ্যমে হয়, তা নয়। খেলাধুলার মাধ্যমেও শারীরিক ও মেধার বিকাশ ঘটে। খেলাধুলা আমাদের জীবনই অংশ। তাই প্রতিটি স্কুলে নিয়ম করে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে। কোন কোন স্কুলে সেই আয়োজন একটু কম করে, কোনটাতে আবার বেশি করে।’
সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতী মোহন পাইলট স্কুল এন্ড কলেজে সোমবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক তানভীর আহম্মেদ টিটু।
৪৭ তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ছিল।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, রেবতী মোহন পাইলট স্কুলে আমি এর আগেও এসেছি। তখন স্কুল ছোট ছিল কিন্তু মাঠ ছিল বড়। এখন স্কুল বড় হয়েছে সাথে সাথে ছোট হয়ে গেছে মাঠ। তারপরেও এখানে যে ভাবে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে, সেই আয়োজন দেখে খুব ভালো লাগছে। শুনেছি এখানে ছেলেরাতো খেলেই, মেয়েদেরও ক্রিকেট খেলাও ব্যবস্থা রয়েছে। আমি মেয়েদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই। আমরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়েদের ক্রিটেক খেলার প্রশিক্ষনের জন্য একটি উইকেট বানিয়ে দিয়েছি। যাতে মেয়েরা একটি সিকিউট পরিবেশে সেই খেলা অনুশিলন করতে পাড়ে।
তানভীর আহম্মেদ টিটু বলেন, আমি মেয়েদেরকে সরাসরি মাঠে খেলতে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। জেলা ক্রীড়া সংস্থার আলাদা ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ রয়েছে। আরও একটি ইনডোর স্টেডিয়াম হবে। ইনডোর স্টেডিয়ামটি হয়ে গেলে মেয়েদের প্রশিক্ষনের আর বাঁধা থাকবে না। যতদিন পর্যন্ত এই বাঁধাটি আছে, ততদিন পর্যন্ত স্কুলের ভিতরে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যেতে চাইছি। যদি রেবতী মোহন পাইলট স্কুল মনে করে মেয়েদের প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা কিছু প্রয়োজন আমি করে দিবো। পাশাপাশি খেলাধুলার সামগ্রী কিনে দিবো। যতবেশি আমাদের সন্তানেরা খেলাধুলায় অংশ নিবে, আমাদের বাংলাদেশ ততবেশি খেলাধুলায় উন্নত হবে। এখন বাংলাদেশে যে সাকিব-তামিমরা খেলছে। তারও কিন্তু তোমাদের মতোই কোননা কোন স্কুলে পড়ালেখা করেই সেখানে গিয়েছে। তোমাদের মতোই কোন না কোন স্কুলের মাঠে খেলেছে। কোন শিক্ষকের অনুপ্রেরণায় ও দিক নিদের্শনায় আজকের সাকিব আর তামিম ইকবাল।
তানভীর আহম্মেদ টিটু বলেন, এই এলাকাটি আমার নানীর বাড়ির এলাকা, এখানে ছোট বেলায় বহু এসেছি। ২ থেকে ৩ দিন করে থেকেছি। তাই এই এলাকার প্রতি আমার আলাদা একটি টান আছে। আমার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে হয় কিন্তু নিজের এলাকার নিজেদের স্কুলে অতিথি হয়ে আসা হলে সম্মানটা অনেক বেশি লাগে। আজকে এই অনুষ্ঠানে আমাকে প্রধান অতিথি করায় আমি অনেক বেশি সম্মানিত বোধ করছি। স্কুলের খেলাধুলার যে কোন প্রয়োজনে আমাকে ডাকলে আমি নিজে এসে পড়বো।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা যখন স্কুলে পড়েছি, আমাদের এসএসসি শেষ হয়েছে ১৯৯০ সালে। গত ৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ স্টেডিয়ামে আমাদের ব্যাচ নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করেছি। প্রায় ৩২ বছর পর আমরা যখন সবাই সবার সাথে এক সাথে হয়েছি, সেদিন একটা মিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। আজকে তোমরা যারা স্কুলে আছো, এই সময়টা তোমরা উপভোগ করবে সেদিন, আমাদের মতো বড় হয়ে যাবে। যত বড় হবে, তত দায়িত্ব বাড়বে এবং এই দিন গুলোতে ফিরে আসার ইচ্ছে বাড়বে। তাই দিন গুলোকে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা করে উপভোগ করো।
রেবতী মোহন পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্কুলটির দাতা সদস্য মো. আ. মতিন প্রধান, অভিভাবক সদস্য কবির হোসেন, শিক্ষক প্রতিনিধি মোহাম্মদ সফিউদ্দিন খান, সংরক্ষিত নারী শিক্ষক প্রতিনিধি আক্তার জাহান প্রমুখ।