কনকনে শীতে গ্রামবাংলার অন্যতম প্রিয় খাবার পিঠা। ঘরে ঘরে বেড়ে যায় পিঠার কদর। আর এ মৌসুমকে কেন্দ্র করে পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা ও কারিগরেরা।
এখন শুধু বাড়িতে নয়, শীত এলে বিভিন্ন পাড়া বা মহল্লার অলিগলিতে দেখা যায় হরেক রকমের পিঠার দোকান। সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে চিতই পিঠার দোকান। মূলত কাঠ বা টিন দিয়ে এসব দোকান তৈরি করে থাকেন পিঠা বিক্রেতারা। আর সেই পিঠার স্বাদ নিতে দোকানে ভিড় জমান সব শ্রেণির পিঠাপ্রেমীরা। শুরুতে কিছুদিন বিক্রয় কম হলেও এখন দোকানগুলোতে বেচাকেনাও বেড়েছে প্রচুর। কারও পছন্দ তুলতুলে নরম চিতই পিঠা, আবার কারও পছন্দ কড়া ভাজা পিঠা। এর মধ্যে ডিম-চিতই ও দুধ-চিতই পিঠাও রয়েছে পছন্দের তালিকায়।
ইসদাইর এলাকার সালমা বেগম নামে একজন পিঠা ব্যবসায়ী জানান, শীত এলেই তিনি চিতই পিঠা বিক্রয় করেন। সাংসারিক বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি পরিবারের একটু বাড়তি আয়ের জোগান দিতে তিনি এ পেশা ধরে রেখেছেন দীর্ঘদিন। অল্প খরচে ভালো লাভের আশায় প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত তিনি এ ব্যবসা করছেন। এতে তাঁর বেশ ভালো আয় হচ্ছে বলে জানান।
সাইনবোর্ড এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী ইমরান খান বলেন, ‘ছোট থেকেই আমার পিঠা খুব পছন্দ। শীতের সময় আমি বাসায় বায়না ধরতাম পিঠা খাওয়ার জন্য। এখন বড় হয়ে গেছি ব্যবসা নিয়ে সারা দিন ব্যস্ত থাকি, তাই পিঠা খাওয়া নিয়ে আগের মতো আর বায়না ধরতে পারি না। ডিম-চিতই পিঠা আমার খুব পছন্দ। প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে আমি দোকানে ছুটে যাই একটু পিঠার স্বাদ নিতে।
২নং রেল গেইট এলাকার পিঠা ব্যবসায়ী রশিদ জানান, শীত বেশি পড়লে পিঠা বিক্রি বেশি হয়। প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ছয় কেজি চালের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। চালের গুঁড়া, নারকেল, গুড়, লাকড়ি ও অন্যান্য খরচ বাদে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা লাভ হয় দিনে। শুক্রবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়। মূলত সকাল ও সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি হলেও তুলনামূলক সন্ধ্যায় দোকানে পিঠার চাহিদা বেশি থাকে। অনেক সময় সন্ধ্যা হলে পিঠা কিনতে দোকানে সিরিয়াল দেন ক্রেতারা।
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বাড়িতে নিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খান। এ ছাড়া বেশি পিঠা প্রয়োজন হলে এক দিন আগে অর্ডার দিয়ে যান। আবার পরিচিত অনেকে সকালে আমার বাসায় গিয়ে বলে আসেন। আমি পিঠা তৈরি করে সন্ধ্যায় তাঁদের বাসায় দিয়ে আসি।’