মজুরি বোর্ড গঠন করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রোডাকশন শ্রমিকদের পিসরেট দ্বিগুণ করা, শ্রমিকদের রেশন, পেনসন, আবাসন, চিকিৎসা ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিকাল ৪ টায় চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে ওই মানববন্ধন ও এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এম কাদির, নির্মল বর্মন, সামিউল হক, সাজু।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান বিবেচনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি কমপক্ষে ২৪ হাজার টাকা হওয়া উচিত। এজন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন দরকার। কিন্তু সরকার এবিষয়ে কর্ণপাত করছে না। সরকার বিকেএমইএ, বিজেএমইএ-র স্বার্থ রক্ষা করে যাচ্ছে। বর্তমান নিত্যপণ্যের দাম বিবেচনা, সিপিডিসহ বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণা, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকে সবচেয়ে কম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২৮২৪ ডলার ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে গার্মেন্টসে ২৪ হাজার টাকার কম মজুরি হওয়ার কোন কারণ নেই। সেই বিবেচনায় গার্মেন্টসে পিসরেট শ্রমিকদের রেট দ্বিগুন হওয়া প্রয়োজন।
তারা বলেন, গার্মেন্টস বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস। প্রতি বছর গার্মেন্টসের রপ্তানি আয় বাড়ছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশের বেশি আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। সাড়ে তিন হাজার কারখানায় ৪০ লাখ শ্রমিকের শ্রমে ঘামে এই পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি আয় হচ্ছে। ইতিমধ্যে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তার অবস্থান দাঁড় করিয়েছে। অথচ আমরা দেখছি সেই গার্মেন্টসের শ্রমিকদের মজুরি পৃথিবীর মধ্যে সর্বনিম্ন। জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে আকাশ ছুঁয়েছে। বেড়েছে বাড়ি ভাড়া, শিক্ষা-চিকিৎসা খরচ। দফায় দফায় বাড়ছে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম। শ্রমিকের আয় না বাড়ায় তাদের জীবনমান বাড়ছে না। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত বাংলাদেশে শ্রমিকরা মান সম্পন্ন জীবন যাপন করার মত মজুরি পাবে না এটা হতে পারে না।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠন করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা নির্ধারণ, পিসরেট শ্রমিকদের রেট দ্বিগুন করা, রেশন পেনসন, আবাসন, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দাবিতে শ্রমিকদের তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।