সকাল নারায়ণগঞ্জঃ নারায়নগঞ্জে ধলেশ্বরী নদী গিলে খাচ্ছে অবৈধ দখলদাররা। যৌবন হারিয়েছে এক সময়ের খরস্রোতা এই নদীটি। দুই তীর দখল করে গড়ে উঠেছে বড় বড় ভবন, ফিলিং স্টেশন, পাকা-আধাপাকা ঘরবাড়ি-দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরণের ¯াপনা।
সূত্রে জানা গেছে, নারায়নগঞ্জ সদরের চরসৈয়দপুর এলাকার ধলেশ্বরী নদীর তীরে প্রায় ৫ হাজার বর্গ ফুট জায়গা বালুভরাট করে অবৈধভাবে দখল করে নাভানা সিএনজি ফিলিং স্টেশন নির্মান করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নাভানা সিএনজি ফিলিং স্টেশন নদীটির বেশ কিছু অংশ (প্রায় পাঁচ হাজার বর্গ ফুট) অবৈধভাবে বালুভরাট করে দখল করা রেখেছে। এ ব্যাপারে নাভানা ফিলিং স্টেশনের কতৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা বলেন আমরা অবৈধভাবে নদী দখল করিনি। তাছাড়া তিনি এক সাংবাদিক নেতার নাম বলে এ প্রতিবেদককে জানান, তাকে চিনেন, তার বড় ভাইকে চিনেন? তার বড় ভাই আমার ভগ্নিপতি। উনি এবং আমি দুজনেই এ জমির মালিক, উনাকে ফোন দিন উনি সব বলতে পারবে।
এদিকে এলাকাবসীসূত্রে জানা গেছে, যে নদী ছিল একসময় পূর্ণ যৌবনা, যার বুক চিরে চলতো বড় বড় লঞ্চ-টলার। অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে উঠতে চলতো ছোট-বড় নৌযান। সেসব এখন অনেকটা ইতিহাস। নতুন প্রজন্মের কাছে এসব অবিশ্বাস্য গল্প। সেই নদী এখন নাভানা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মত বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা অবৈধভাবে দখলেরর কারনে ধলেশ্বরী নদী আজ মৃতপ্রায়।
ধলেশ্বরী নদীটির বিভিন্ন অংশের দখল নিয়ে মালিকানা দাবি করে আসছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। অধিকাংশ এলাকায় ভূমিদস্যুদের দখলের কারণে ধলেশ্বরী নদী প্রায় মরে যাচ্ছে। ধলেশ্বরী নদী দখলদারদের দৌরাত্ম্যে আজ মৃত প্রায় নদীটি। নদীর ধারে গড়ে উঠেছে বড় বড় বিল্ডিং, ফিলিং স্টেশন, ডক ইয়ার্ড, লবনের ফ্যাক্টরী, কয়েকটি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দখলের কারণে বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য কোনো সময় ধলেশ্বরী নদীতে খুব একটা পানি থাকে না।
নদীর বেশ খানিকটা অংশ মাটি দিয়ে অবৈধভাবে ভরাট করে বিভিন্ন কাঁচা-পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। একইভাবে কয়েকজন প্রভাবশালী নদীর জায়গা দখল করে বাড়ি ও দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। এসব দেখার যেন কেউ নেই। কালের বিবর্তনে এ নদী ধীরে ধীরে মরা খালে পরিণত হতে যাচ্ছে। কোনো কোনো অংশে ¯ানীয় প্রভাবশালীরা সরকারের কাছ থেকে ভূয়া তথ্য দিয়ে লিজ নিয়ে দখল করে আছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে বাধাগ্র¯ হচ্ছে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ। কোন কোন সময় নদীবক্ষ থেকে মাটি ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়ে।
ভূমিদস্যুরা চাহিদা অনুযায়ী যে যার মতো নদী ব্যবহার করছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নোঙ্গরসহ বিভিন্ন সংগঠন নদ-নদী দখলমুক্ত করতে ইতিমধ্যে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। এ ক্ষেত্রে সরকার বা জেলা প্রশাসনের কোনো তদারকিই নেই বলে এসব সংগঠনের অভিযোগ।