নারায়ণগঞ্জে নানা আয়োজন ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) পালিত হয়েছে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন।
সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে সকল ভক্তদের পদচারনা ও প্রার্থনায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে সাধু পৌলের গীর্জায়। সকাল ৯ টায় বড়দিনের সমাবেত সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা।
ভক্তরা একে অপরের সাথে বড় দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর সকাল সাড়ে ১০টায় বড় দিনের মূল অনুষ্ঠানের কেক কাটার মধ্য দিয়ে বড় দিনের উপসনা ও শুভ বড় দিনের কেক পরিবেশন করা হবে।
কেক কাটার পূর্বে থেকে সবাইকে বড়দিনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরা সকল ধর্মের মানুষ এক সাথে বসবাস করি। সকলে শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজ নিজ ধর্মের অনুষ্ঠান সকলকে নিয়ে পালন করে থাকি। এ অসম্প্রাদায়িক সম্প্রতি ধরে রাখতে হবে। সকল ধর্মের মূলমন্ত্রই হচ্ছে শান্তি। তাই ধর্মের রীতিনীতি আমরা সঠিকভাবে পালন করলেই আমাদের মাঝে হানাহানি দূর হয়ে শান্তি ফিরে আসবে।
খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীরা বলেন, সরকারের প্রতিনিধি হয়ে আমি এখানে এসেছি সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে। বড় দিন উপলক্ষ্যে আমরা বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। বাইরে পুলিশ ও র্যাব রয়েছে। এ ছাড়াও র্যাবের কয়েকটি টহল টিমও রয়েছে। যদি কেউ বিশৃঙ্খলার চেস্টা করে তবে তাকে চরম মুল্য দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে কোনরূপ ছাড় দেয়া হবেনা সে যেই হোক।
শুভ বড় দিন উপলক্ষ্যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নারায়ণগঞ্জবাসীকে বড় দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিন্টু পলিকাপ পিউরীফিকেশন বলেন, আজ থেকে ২ হাজার বছর আগে প্রভু যিশুখ্রিষ্ট আমাদের মাঝে এসেছিলেন। মানুষকে পাপ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, এবার দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটায় গির্জায় তেমন কোন উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। আনন্দ উৎসব সকলের ঘরে ঘরে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে শহরের দুটি গির্জাকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। গির্জার সামনে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। বড়দিন উপলক্ষে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পৌলের গির্জা ও সিরাজউদ্দৌলা সড়কের ব্যাপ্টিস্ট চার্চকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। তৈরি করা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। এ ছাড়াও শিশুদের জন্য বিশেষ উপহারের ব্যবস্থাও করা হয়। তবে নাশকতার আশংকায় এবারের বড় দিনের কর্মসূচীতে কিছুটা সীমাবদ্ধতায় পালন করতে হয় খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের।