(ঢাকা বিভাগ) আয়তন: ৬৮৭.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৩র্ থেকে ২৩°৫৭র্ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৬র্ থেকে ৯০°৪৫র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নরসিংদী এবং গাজীপুর জেলা, দক্ষিণে মুন্সিগঞ্জ জেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে ঢাকা জেলা।
জনসংখ্যা ২১৭৩৯৪৮; পুরুষ ১১৬১৯৭১, মহিলা ১০১১৯৭৭। মুসলিম ২০৫৭৩৯৮, হিন্দু ১১৫১৫১, বৌদ্ধ ৬৯৫, খ্রিস্টান ৩৮৫ এবং অন্যান্য ৩১৯।
জলাশয় প্রধান নদী: শীতলক্ষ্যা, মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বুড়িগঙ্গা, বালু ও ধলেশ্বরী নদী।
প্রশাসন নারায়ণগঞ্জ মহকুমা গঠিত হয় ১৮৮২ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে আড়াইহাজার উপজেলা সর্ববৃহৎ (১৮৩.৩৫ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বন্দর (৫৫.৮৪ বর্গ কিমি)। নারায়ণগঞ্জ সিটি করর্পোরেশন গঠন করা হয় ২ মার্চ ২০১১।
জেলাআয়তন(বর্গ কিমি)উপজেলাপৌরসভাইউনিয়নমৌজাগ্রামজনসংখ্যাঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)শিক্ষার হার (%)শহরগ্রাম৬৮৭.৭৬৫২৪৭৮৪৫১৩৭৯১২২১৯৫৫৯৫১৯৯৩৩১৬১৫১.৭জেলার অন্যান্য তথ্যউপজেলা নামআয়তন (বর্গ কিমি)পৌরসভাইউনিয়নমৌজাগ্রামজনসংখ্যাঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)শিক্ষার হার (%)আড়াইহাজার১৮৩.৩৫-১২১৮২৩১৭৩৩১৫৬৬১৮০৮৩৭.৪নারায়ণগঞ্জ সদর১০০.৭৫১১০৫৬১৩২৮৮২৯৭১৮৭৬৪৫৮.৮বন্দর৫৫.৮৪১৫৮৯১৫৮২৫০২২০৪৪৮১৫৩.৭রূপগঞ্জ১৭৬.১৬-৯১৪৪২৮৫৪০৩৬২৯২২৯১৪৯.৪সোনারগাঁও১৭১.৬৬-১১৩৫১৪৮৭৩০৫৫৬২১৭৮০৪৭.০
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ২ নং সেক্টরের অধীন ছিল। ২৮ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদরের উত্তর চাষাড়ায় পাকবাহিনীর অতর্কিত হামলায় বেশ সংখ্যক লোক নিহত হয়। ৩ এপ্রিল পাকবাহিনী বন্দর উপজেলার সিরাজদ্দৌলা ক্লাব মাঠে ৫৪ জন নিরীহ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। নারায়ণগঞ্জ সদরের বাবুরাইল পুলে (রাজাকারদের অবস্থানস্থল) মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৭ জন রাজাকারকে হত্যা করে। ২৯ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সদরে বুড়িগঙ্গার পাড়ের বক্তাবলী ডিক্রিচর এলাকায় পাকবাহিনী ১৩৯ জন নিরীহ লোককে গুলি করে হত্যা করে। সোনারগাঁও উপজেলার সন্মানদি, পিরোজপুর ও চিলারবাগ নামক স্থানে গণহত্যা সংঘটিত হয়।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫১.৭%; পুরুষ ৫৫.৯%, মহিলা ৪৬.৯%। কলেজ ১৬, কারিগরি কলেজ ২, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ১, ভোকেশনাল স্কুল ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৫৮, কিন্ডার গার্টেন ৭৬, কলেজিয়েট স্কুল ১, মাদ্রাসা ৫৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি তোলারাম কলেজ (১৯৩৭), নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৬৪), সোনারগাঁও ডিগ্রি্ কলেজ (১৯৬৯), মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ, আড়াইহাজার সরকারি ডিগ্রি কলেজ, কদমরসূল কলেজ, নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজ (১৯৬৬), ইনিস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজী, নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫), আড়াইহাজার পাইলট বিদ্যালয় (১৮৯৭), সোনারগাঁও জি আর ইনিস্টিটিউট (১৯০০), বি এম ইউনিয়ন হাইস্কুল (১৯০০), মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১০), দুপতারা সি সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪), আইটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), মোগড়াপাড়া এইচ জি জি স্মৃতি বিদ্যায়তন (১৯৩৯), নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৮), বন্দর গার্লস হাইস্কুল, গোপালদী ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫২), দারুসসুন্নাহ কামিল মাদ্রাসা।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: শীতলক্ষ্যা, খবরের পাতা, সচেতন, আজকের নারায়ণগঞ্জ, সোজাসাপ্টা, ডান্ডি বার্তা, দেশের আলো, ইহকাল, যুগের চিন্তা, অনিয়মিত: সোনারগাঁ কাগজ, সোনারগাঁ পরিক্রমা।
লোকসংস্কৃতি জারিগান, পালাগান, মুর্শিদিগান, মেয়েলি গীত, ভাবসঙ্গীত এবং সোনারগাঁ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত বিভিন্ন লোক উৎসব উল্লেখযোগ্য।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ১৪.৩৮%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৯১%, শিল্প ৭.৩৩%, ব্যবসা ২৩.৮৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৬.৩৪%, নির্মাণ ২.৫২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, চাকরি ২৩.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৩.৭৭% এবং অন্যান্য ১৪.৫৬%।
দর্শনীয় স্থান সোনারগাঁও লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন ও যাদুঘর, পানাম নগর, রূপগঞ্জের রাসেল পার্ক ও চিড়িয়াখানা, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি ও জিন্দা পার্ক, ফতুল্লায় মেরী এন্ডারসন ভাসমান রেস্তোরাঁ, হাজিগঞ্জের ঈশা খাঁর কেল্লা, সোনাকান্দা দুর্গ, নারায়ণগঞ্জ সদরের বিবি মরিয়মের মাযার ও মসজিদ।