সকাল নারায়ানগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জের নবীগঞ্জ গুদারা ঘাট এলাকায় সাংবাদিকদের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের (শারস) আঘাতে আনন্দ টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সৈয়দ সিফাত আল রহমান লিংকন, অগ্রবাণী প্রতিদিন পত্রিকার ফটো সাংবাদিক জামাল তালুকদার ও জনতার কাগজের রিপোর্টার মিজানুর রহমান আহত হন। এছাড়া সাংবাদিক মিজানের মটর সাইকেলটিও কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর নবীগঞ্জ ফেরীঘাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
আহত তিন সাংবাদিককে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আহত লিংকন বাদি হয়ে এম সার্কাস এলাকার মিঠু মিয়ার ছেলে সোয়াদ ওরফে সোহাগকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ১৪।
এর আগে ঘটনাস্থল থেকে আব্দুর রহমান নামে নামধারী এক আওয়ামীলীগ নেতা ও ১১নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়।এছাড়া হামলায় ব্যবহৃত একটি ধারলো শারস কোদাল জব্দ করা হয়।
আহত সাংবাদিকরা জানান, সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে সোনারগাঁয়ের যাওয়ার পথে শীতলক্ষ্যা নদী পার হতে হাজীগঞ্জ ঘাট থেকে ফেরিতে ওঠেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। ফেরি চালু হবার পর দেখা যায় অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক এক শিশুকে মারধর করছে। মারার কারন জানতে চাইলে সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে ঐ যুবকরা। গালাগাল করতে বারন করলে এবং সাংবাদিক পরিচয় দিলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তারা। এক পর্যায়ে ফেরী থেকে ধারালো একটি শারস (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে এলোপাথারি কোপ নিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা করে। এতে অগ্রবানী পত্রিকার চীফ ফটো সাংবাদিক জামাল তালুকদার, লিংকন ও জনতার কাগজের সাংবাদিক মিজান আহত হয়। এছাড়া সাংবাদিক মিজানের মটর সাইকেল কুপিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়।
এক পর্যায়ে ওই যুবকের হাত থেকে ধারালো শারস ছিনিয়ে নিয়ে তাকে আটক করেন আশেপাশের লোকজন। এক পর্যায়ে আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি এসে হামলা করা ওই যুবককে ছাড়িয়ে নিয়ে তাকে পালাতে সহযোগিতা করে। এমনকি হামলা করা অস্ত্রটিও পানিতে ফেলে দেয়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ আবদুর রহমানকে আটক করে।
আরো জানা যায়, হামলাকারী ওই সন্ত্রাসীর নাম সোয়াদ। সে হাজীগঞ্জ এলাকার মিঠুর ছেলে। এদিকে হামলাকারীকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতায় করায় আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। আবদুর রহমান গত নাসিক নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন।
আটক আবদুর রহমানের কাছ থেকে জানা যায়, ওই যুবকের নাম সোয়াদ। সে হাজীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মিঠুর ছেলে।
এ ব্যপারে হামলাকারীদের আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার পরিদর্শক(তদন্ত) জয়নাল আবেদীন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার এজাহার নামীয় একজনকে আটক করা হয়েছে এবং বাকীদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।
এদিকে সাংবাদিক জামাল তালুকদারের সাহসী ভুমিকার কারণেই বড় ধরনের বিপদের হাত থেকে রক্ষা পায় অপর সাংবাদিকরা এমনটাই জানান স্থানীয়রা। তারা সাংবাদিক জামাল তালুকদারের ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, সকল পেশার সহকর্মীদের এমন ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। এছাড়াও সমাজের আপরাধ দমনে এবং অপরাধীদের রোধ করতে জামাল তালুকদারের মতো সাহসী মানুষের খুব বেশী প্রয়োজন বলে তারা জানান।