বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক ফারহানা মানিক মুনার সভাপতিত্বে এবং নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সম্পাদক সৌরভ সেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক ইউশা ইসলাম, মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তাইরান আবাবিল রোজা, হাজী মিছির আলী কলেজ কমিটির আহ্বায়ক মৌমিতা আক্তার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গাবতলি আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক সায়হাম আযমি, মহিলা কলেজের সংগঠক বর্ষা আক্তারসহ বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা।
বক্তারা বলেন, ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ছাত্রসমাজ শরিফ শিক্ষা কমিশনের শিক্ষাধ্বংসী নীতির বিরুদ্ধে হরতালের ডাক দেয়। পরবর্তীতে শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে প্রাণ হারায় মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজিউল্লাহরা। আজকে এই সমাবেশ থেকে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। দুঃখজনক সত্য হচ্ছে, প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া শিক্ষা দিবস সম্পর্কে আজকের ছাত্ররা জানেই না। আজকে ২০২২ সালে শিক্ষা আন্দোলনের ৬০ বছর পার করেও জাতীয় বাজেটে শিক্ষার জন্য বরাদ্দ নামমাত্র। অর্থনৈতিক সক্ষমতা ছাড়া শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পাওয়া দুষ্কর। ফলে স্পষ্টই বলা যায়, বর্তমান সরকার সেই ৬২র শরিফ শিক্ষা কমিশনেরই ভূত পোষে।
সভাপতির বক্তব্যে ফারহানা মুনা বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা আমাদের পাঠ্যপুস্তক কোথাও নিরপেক্ষ ইতিহাসের শিক্ষার অবকাশ নাই। ক্ষমতার হাত বদলের সাথে আমাদের বই-পত্র এবং ইতিহাসের বদল ঘটে। লাখো মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য যেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন হলো সেই দেশে আজকে শিশু বয়স থেকে পড়তে হয় ‘শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত দেশকে আজকে একব্যাক্তির দেশে রুপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গান গেয়ে প্রতিনিয়ত বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করে চলছে। কথা ছিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে মানুষ গড়ার কারখানা অথচ, আমাদের স্কুল- কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ে উঠেছে সন্ত্রাস তৈরির কারখানা। ক্ষমতার মদদে নারায়ণগঞ্জ শহরের তোলারাম কলেজকে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের টর্চার সেলে রুপান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের গণরুম, গেস্টরুম কালচার তৈরি করছে ছাত্রদের জন্য এক মরণ ফাঁদ। ভর্তির সিট সংকট, অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা, শিক্ষা শেষে কর্মসংস্থানের সংকট ছাত্রদের ঠেলে দিচ্ছে আত্মহত্যার দিকে। বাংলাদেশ হাটছে এক মেধাশূণ্যতার পথে। আজকের ছাত্ররাই আগামীর বাংলাদেশ। ফলে সামনের বাংলাদেশকে মেধাশূণ্য, নেতৃত্বশূণ্য, জ্বি হুযুর সমাজ গড়ে তুলতে এবং নিজের ক্ষমতার স্থায়ীকরণের জন্যই বর্তমান সরকার বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করছে। লাখো ছাত্রদের জীবন নিয়ে তামাশা করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাস সাক্ষি, ‘৫২, ‘৭১, ‘৯০ সকল স্বৈরাচারের উৎখাতে এদেশের তরুণরা অগ্রণী ভুমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের ছাত্র-তরুণরা এইদেশের দায়িত্ব নিতে যানে৷ মানসম্মত শিক্ষা, নিরাপদ ক্যাম্পাস, দুর্ণীতিমুক্ত কর্মসংস্থান নিশ্চিতের লড়াই বেগবান করা এখন প্রত্যেক ছাত্র তথা তরুণের কর্তব্য। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে প্রত্যেক ছাত্র-তরুণকে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নির্ভিক চিত্তে যুক্ততার আহবান জানায়।