সকাল নারায়ণগঞ্জ
চাল, আটা, তেলসহ নিত্যপণ্য, লানি তেল, সিলিন্ডার গ্যাস, ইউরিয়া সারের দাম ও গণপরিবহনের ভাড়া কমানো এবং শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের রেশনের দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার উদ্যোগে রবিবার বিকাল ৪ টায় চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে সমাবেশের মাধ্যমে শুরু হয়ে লাকীবাজারে পদযাত্রা শেষ হয়।
এসময় বৌবাজার ও লাকীবাজারে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভাগুলোতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সমন্বয়ক গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাসদ ফতুল্লা থানার সদস্যসচিব এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, উপদেষ্টা সামিউল হক, সহ-সভাপতি নির্মল বর্মন প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিনিয়তই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। অব্যাহত দাম বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। উপরের পর্যায়ে সকল পণ্যের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেট। তারাই কারসাজি করে ব্যাপক মাত্রায় দাম বৃদ্ধি করছে। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান সরকার ভোট ডাকাতির সরকার, ফলে জনগণের প্রতি তাদের কোন দায় নেই। তারা লুটপাটকারী, দূর্নীতিবাজ, মুনাফাখোরদের সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। সরকার গত ৫ আগস্ট গণশুনানি না করে আইন লঙ্ঘন করে জ্বালানি তেলের দাম ৫১% পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে এ দাম বাড়িয়েছে। অথচ দাম বৃদ্ধির সময় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিল। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম আরও কয়েকগুণ বাড়িয়েছে এবং গণপরিবহনের ভাড়াও মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ৫১% পর্যন্ত দাম বাড়লেও সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার কথা বলে জ্বালানি তেলের দাম নামমাত্র ৩.৭% কমিয়েছে। যার কোন প্রভাব নিত্যপণ্যে ও পরিবহনে পড়েনি। দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষ তাদের খাবার কমিয়ে দিয়েছে। অথচ মন্ত্রীরা বলছেন বেহেস্তে আছি, কেউ বলছেন জনগণ সুখে আছে, কারণ তারা কাপড়বিহীন নেই। এভাবে সরকার ও তার মন্ত্রীরা জনগণের সাথে তামাশা করছে। সরকার ইউরিয়া সারের দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা বাড়িয়েছে। এতে সার, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষিতে বিঘা প্রতি ১২ শত টাকা খরচ বাড়বে কৃষকের। বাড়তি টাকার জোগান না দিতে পারায় উৎপাদন কমে যাবে। সারের দাম, তেলের দাম, পানির দাম বাড়ার সাথে সাথে এখন আবার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার তৎপরতা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ১২ কেজি সিলিন্ডারে ১৩ টাকা বাড়িয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দুর্নীতি-লুটপাট-দলীয়করণ চলছে সর্বত্র। সরকার একদিকে উন্নয়নের ঢাক-ঢোল পিটাচ্ছে, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে, লুটপাট দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণের উপর দূর্ভোগ চাপিয়ে দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন না ঘটিয়ে কোন রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নয়ন হয় না। নেতৃবৃন্দ বর্তমান সরকারের দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ও জ¦ালানি তেলের, ইউরিয়া সার ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।