নারায়ণগঞ্জে দিন দিন বেড়েই চলছে মাদক ব্যবসা। সম্প্রতি কালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে বহুগুন। গত কয়েক মাস ধরেই মাদকের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশের বিশেষ কোন অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি। তবে র্যাবের জালে বিপুল পরিমান মাদকসহ ব্যবসায়ী গ্রেফতার হলেও গ্রেফতার কৃত অধিকাংশরাই নারায়ণগঞ্জের বাহিরের। তারা মূলত নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে মাদক বহন কালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে। তাই বরাবরই অধরা থেকে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ীরা। তাই অনেকটা নারায়ণগঞ্জে পুলিশের নাকের ডগায় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মাদক।
তল্লা রেল লাইন এলাকায় মাদক সম্রাট ইয়াকুবের শেল্টারে অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদক বিক্রি হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অন্তত ৩৫টি স্থানে নিয়মিত মাদকের কেনাবেচা চলে। আর নেশার টাকা জোগাতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এই শহরে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র রয়েছে ১২টি।
র্যাব,পুলিশ,ডিবির হাতে চাঁনমারী এলাকায় অভিযানে বেশকিছু মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হলেও গ্রেফতার হচ্ছেনা তল্লা এলাকার মাদক সম্রাট ইয়াকুব।
কিছুদিন আগে চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় কিছু সন্ত্রাসী ইয়াকুবকে ইয়াবা সহ আটক করলেও তাকে প্রশাসনের হাতে তুলে না দিয়ে ৫০০০০ টাকা খেয়ে তাকে আবার ছেড়ে দেয়।
নগরবাসীরা বলছেন, পুলিশের নিস্কৃয়তার কারণেই মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া ধরা পড়লেও সহজেই জামিন হয়ে যাওয়ায় মাদকের কারবারিদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
শহরের চাষাড়া রেললাইন বস্তি, আমলাপাড়া, মাসদাইর, ইসদাইর, হাজীগঞ্জ, পাঠানতলী, কোতালেরবাগ, সস্তাপুর, র্যালি বাগান, ডনচেম্বার, ব্যাংক কলোনি, খানপুর, তল্লা, এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক সরবরাহ করে থাকেন মাদক সম্রাট ইয়াকুব।
সম্প্রতি গত কয়েক মাস ধরে মাদকের বিরুদ্ধে তেমন বিশেষ অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় আবারো শহরে মাদক ব্যবসা বেড়েছে। আবারো জেলার আনাচে-কানাচে ও অলিতে-গলিতে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে সকল প্রকার মাদকদ্রব্য। দিনে-রাতে মাদক সেবীরা মাদক ক্রয় করতে ভিড় জমাচ্ছে মাদক স্পটগুলোতে।
আশংকাজনকহারে মাদকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের প্রতি আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।
পুলিশের অভিযান থেমে যাওয়ায় আবারো দিন দিন বাড়ছে মাদকের ব্যবহার। অভিযোগ রয়েছে, মাদকের শেল্টারদাতারা অধরা থাকায় মাদক স্পটগুলোতে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে মাদক। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যারা মাদক বিরোধী বক্তব্য রাখছেন এমন অনেক প্রভাবশালী নেতার পরিবারের সদস্যরা মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার পাঞ্চায়েত কমিটির নেতার পরিবারের সদস্যরা এলাকায় প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসা করছে। আর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করলে পাঞ্চায়েত কমিটির নেতারা তদবির করে মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নিচ্ছে।
এছাড়াও সম্প্রতি মাদকসহ অনেক প্রভাবশালী গ্রেফতার হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। মাদকের সাতে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়ায় নারায়ণগঞ্জে মাদক নিয়ন্ত্রন করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এদিকে মাদকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঘটছে অবনতি। বাড়ছে ছিনতাই, রাহাজানিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড।
জানাগেছে, কক্সবাজার থেকে বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা আসছে নারায়ণগঞ্জে। বিশেষ করে এসএ পরিবহনের কোরিয়া সার্ভিসের মাধ্যমে শহরে মাদকের চালন ঢুকছে। গত কয়েক বছর আগেও এসএ পরিবহনের কোরিয়া সার্ভিসের অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করেছিল পুলিশ।