সকাল নারায়নগঞ্জঃ
নারায়নগঞ্জ শহরের খানপুর তল্লায় মাদক ব্যবসায়ীরা আগের থেকে দিগুণ অনুসারে মাদক বিক্রি করে হচ্ছে।
অতীতে এদের বিভিন্ন অলিতে গলিতে ব্যবসা করতে দেখা গেলেও এখন রেল লাইনের উপর দাড়িয়ে থেকে মাদক বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।
রেল লাইনে অপরিচিত কোন লোক দেখলেই দৌড়িয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাস করে থাকে কয়টা লাগবে।
এতে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন ভাবে হেস্ত নেস্ত হয়ে থাকে।মাদক ব্যবসায়ীদের জ্বালায় অত্র এলাকাবাসী মুখ খুলতে নারাজ।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে তারা মুখ খুললেই তাদেরকে জীবননাশের হুমকি প্রদান করে খানপুর তল্লা রেল লাইনের মাদক ব্যবসায়ীরা।
এমনকি তাদের মধ্য কেও মাদক বিক্রি করে ছেড়ে দিতে চাইলে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এসে মারদর করে মাদক বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়ে থাকে।
এতে কোন মাদক ব্যবসায়ী ভালো হতে চাইলেও তাদের ভালো হবার সুযোগ থাকে না তল্লা রেল লাইনের মাদক শেল্টারদাতার জন্য।
দেশের মাদক কারবারের অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট এখন নারায়ণগঞ্জ জেলা। ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগস্থল কাঁচপুর এলাকা হল এ মাদকের অন্যতম বর্ডার।
এ দুই মহাসড়কে চলাচলকারী ৩৬টি রুটের যানবাহনে করে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জে মাদকের বিপুল পরিমাণ চালান প্রবেশ করছে।
এর মধ্যে ইয়াবা ও ফেনসিডিলের সবচেয়ে বড় চালানগুলো আসছে মিয়ানমার ও ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা জেলা হয়ে। তবে ফেনসিডিলের চেয়ে এখন সবচেয়ে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে মরণ নেশা ইয়াবা। পুরো জেলায় এমন কোনো পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে ইয়াবার কারবার না হচ্ছে।
জানা গেছে, শুধুমাত্র খানপুর তল্লা রেল লাইন এলাকাতেই প্রতিদিন ইয়াবার চাহিদা রয়েছে প্রায় ২০ হাজার পিসের মতো। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ শহর এখন যেন ইয়াবার শহরে পরিণত হয়েছে। শহর ও শহরতলীর যে কোনো পাড়া-মহল্লাতেই হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা।
শুধু নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর, নগর খানপুর, তল্লা, এলাকাতেই প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার পিস ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে। মাদকের এই নীল দংশনে ধ্বংস হচ্ছে জেলার কিশোর ও যুব সমাজসহ অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীরা।
তবে র্যাব-১১ এর অভিযানে নিয়মিত মাদক উদ্ধারের ঘটনা দেখা গেলেও জেলা পুলিশের ৭টি থানা ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মাদক উদ্ধারে তেমন কোনো বড় সাফল্য দেখা যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতার কারণেই মাদকের এ ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, খানপুর তল্লা রেল লাইন এলাকায় ইদানীং ইয়াবা ব্যবসায় কিশোর বয়সের ছেলে ও নারীরা জড়িয়ে পড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফলে সমাজে ধীরে ধীরে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
তারা বলছেন, যে কিশোর গ্যাংয়ের উদ্ভব হয়েছে প্রতিটি এলাকায়- তার নেপথ্যের প্রধান কারণই হল মাদকের সহজলভ্যতা। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক শেল্টারে কিশোরদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করাচ্ছে বলেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে কিশোর গ্যাংয়ের লড়াই হচ্ছে, খুনের মতো ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করলে জানা যায়
তারা সর্বদা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার আছেনএবং তল্লা এলাকার উপর বিশেষভাবে নজরদারি রাখবেন।