সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (জান্নাত):
ঢাকার ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়ন বাউখন্ড গ্রামে যুবলীগ নেতা মো. সেলিম খানের গাছে আম পারতে গিয়ে পোল্ট্রিফার্মের অবৈধ বৈধ্যুতিক তারে জড়িয়ে মো. রোহান হোসেন (১২) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকাল ৬টার দিকে উপজেলার আমতা ইউনিয়নের বাউখন্ড গ্রামর মো. সেলিম খানের পোল্ট্রিফার্মে ঘটনাটি ঘটে।
নিহত রোহান উপজেলার আমতা ইউনিয়নের বাউখন্ড গ্রামের মো. বাদশা আলমের ছেলে। সে বাউখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
সূত্র জানায়, বাউখন্ড গ্রামের যুবলীগ নেতা মো. সেলিম খানের মালিকানাধীন পোল্ট্রিফার্ম ভাড়া নিয়ে একই এলাকার মো. শহীদুল ইসলাম নামে এক খামারি পরিচালনা করছে।
যুবলীগ নেতা সেলিম খানের বাড়ি থেকেই দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অবৈধভাবে বাড়ির মিটার থেকে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে পোল্ট্রিফার্ম পরিচালনা করছে।
ফার্মের তারে জড়িয়ে বাউখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রোহান হোসেন মারা যায়।
ফার্মের মালিক সেলিম খানের স্ত্রী মুক্তা আম পাড়ার জন্য হাফিজুর, ফরহাদ, কাউছার, রোহান, হৃদয়কে গাছে উঠতে বলেন। পরে পুকুরের পাশে একটি আম গাছে আম পাড়তে রোহান গাছে উঠে বাকিরা গাছের নিছে থাকে। এরপর গাছের পাশ দিয়ে পোল্ট্রিফার্মের অবৈধ বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গাছের নিচে পড়ে যায়।
এই সময় বাকিরা চিৎকার করে দৌড়িয়ে বাড়িতে গিয়ে রোহানের মা বাবাকে খবর দেয়।
সহপাঠীরা ডাক চিৎকার করলে পাশের বাড়ির রাজ মিস্ত্রি দৌড়ে গিয়ে রোহানকে তার থেকে ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়।
তখন রোহান জীবিত ছিল। পরে রোহানের বাবা-মা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এরপর কাওয়ালিপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশকে খবর দেয়া হলে পুলিশ ওই স্কুলছাত্রের মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিহত স্কুলছাত্রের মা ডালিমন বেগম বলেন, ফার্মে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন নেয়ায় এবং সেলিম খানের বউ মুক্তা খানমের কথায় আম পারতে গাছে না উঠলে আজ আমার ছেলে এমনভাবে মারা যেত না।
মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে ছেলেদের লেখাপড়া ও ভরণপোষণ করতাম। এখন আমি এ শোক সইব কিভাবে।
ধামরাই উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. সেলিম খান বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। খবর শুনে বাড়িতে এসে দেখি রোহান মারা গেছে। তবে আমার স্ত্রী ঘর থেকে বের হয় না। আমার একটি প্রতিবন্ধী ছেলে আছে তাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
এই বিষয়ে সাটুরিয়া বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বাড়ির মিটার থেকে পোল্ট্রিফার্মের বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে চালাতে পারবে না। তবে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা নেবো।
কাওয়ারীপাড়া বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান বলেন, বাউখন্ড গ্রামে বিদ্যুৎস্পর্শে একটি ছেলে মারা গেছে খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি।
লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।