বগুড়ার দুপচাচিয়া থেকে দুই সন্তানের জননী এক নারী বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে বার্তা পাঠিয়ে সহযোগিতা চান। তিনি উল্লেখ করেন, তার স্বামী আমেরিকা প্রবাসী এক নারীর সাথে অনলাইনে পরিচিত হয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ বিষয়ে তিনি কাউকে কিছু টের পেতে দেননি। তবে, ক্রমশই তার নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল। এরই মাঝে একদিন তার স্বামী তাকে ও তার দুই শিশু সন্তানকে ফেলে চলে যান।
খোঁজ নিয়ে এই নারী জানতে পারেন আমেরিকা প্রবাসী সেই বাংলাদেশী নারী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তাকে ও দুই শিশু সন্তানকে ফেলে গিয়ে তার স্বামী সেই নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। সেই নারীর সাথে সম্পর্ক, বিয়ে কোনো বিষয়েই তাকে বিন্দু মাত্র টের পেতে দেননি তার স্বামী। ঘরে কোনো টাকা পয়সা বা সংসার চালানোর আয়োজনও রেখে যাননি। দুই শিশু সন্তান নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে তিনি দুই সন্তানসহ তার নিজ গ্রামের বাড়ি দুপচাচিয়ায় বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেন।
বার্তায় তিনি বাংলাদেশ পুলিশের কাছে সহযোগিতা চান যেনো তিনি তার স্বামীকে ফিরে পেতে পারেন। স্বামী সন্তান নিয়ে তিনি সুখী হতে চান। বার্তা পেয়ে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং জানায়,পুলিশ তার পাশে বন্ধুর মতো থাকবে এবং তার সমস্যার সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। এরপর, বার্তাটি নওগাঁ সদর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জুয়েলকে পাঠিয়ে এ বিষয়ে উক্ত নারী ও তার সন্তানদের আইনসম্মত অধিকার নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
উক্ত নারীর ইচ্ছা অনুযায়ী, তার স্বামী আমেরিকা প্রবাসী কথিত সেই নারীকে ইতোমধ্যে বিয়ে না করে থাকলে তাকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে আশ্বাস দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। বার্তাটি পেয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে উক্ত নারীর পাশে দাঁড়ান নওগাঁ সদর থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম জুয়েল।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, উক্ত স্বামী আমেরিকা প্রবাসী কথিত সেই নারীকে ইতোমধ্যেই বিয়ে করেছেন। এ তথ্য জেনে এবং এটা নিশ্চিত হয়ে যে, কোনোভাবেই তার স্বামী তাকে ও তার সন্তানদের কাছে ফিরে আসবে না, ভুক্তভোগী স্ত্রী অভিযোগ দায়েরের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এরপর, ভুক্তভোগী নারী তার ও তার সন্তানদের উপর করা নির্যাতন ও নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে ও প্রাসঙ্গিক প্রামানাদি উপস্থাপন করে নওগাঁ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে, অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত স্বামীকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীর সর্বোচ্চ কল্যাণ ও সুরক্ষা বিবেচনায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিষয়াদির নাম পরিচয় প্রকাশ না করার পলিসি অনুসরন করে থাকে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।