সকাল নারায়ণগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র আইভী পন্থীদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়েরের ইংগিত দিয়েছেন সাংসদ শামীম ওসমান। তিনি বলেন, নিয়াজুলকে সেদিন হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো, ভিডিও ফুটেজ তার প্রমাণ। সে মামলা কী হবে না?
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সংলগ্ন নম পার্কে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ত্রী-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এ কথা বলেন।
নিজেকে একটি মামলার আসামী হিসেবে মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, আমি যাকে গোনায় ধরি না, সেরকম একটি মানুষ মামলা করেছে। আজকে এখানে আমার আসার কথা ছিল না। আমি মামলার আসামী। কি কারণে মামলা, কেন এই মামলা? কে করলো এই মামলা? এর ব্যাখ্যাটা সাংবাদিক ভাইয়েরাই দিবেন।
শামীম ওসমান বলেন, এই মামলায় আসামী করা হয়েছে আমাকে। আসামী করা হয়েছে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এই মামলাটি হয়েছে একমাত্র ষড়যন্ত্রের অংশ। আজ থেকে ২২ মাস আগে মেয়রের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিলো হকারদের সাথে। ওইদিন এ ঘটনার সাথে যুবলীগ, ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না। সেদিন তারা সেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো। এক সময়কার তুখোড় নেতা নিয়াজুল ইসলাম। ঐ দিন তার উপর এসে মেয়রের লোকজন হামলা করেছিল। আজকে সে মামলায় তাকেই করা হয়েছে প্রধান আসামী।
তিনি আরও বলেন, সেদিন নিয়াজুল আছরের নামাজ পড়তে যাবে। গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু গাড়ি যাবে না। তাই হেঁটে যাচ্ছিলো। কেউ যদি হামলা চালাতে যায় তাহলে কি একা যাবে? মিনিমাম দশজন হলেও নিয়ে যেতে। সে ওইদিন হেঁটে যাচ্ছিলো তখন দেখলো গরীব হকারদের মারধর করছিলো। নিয়াজুল বললো, মারছো কেন ভাই? এই অপরাধে তাকে মারধর করা হলো। সেদিন কাদিরও বাধা দিলো নিয়াজুলকে না মারতে। কাদিরতো আইভীর বোন জামাই। যদি আইভীকে হত্যার চেষ্টা করা হতো তাহলে তো সবার আগে কাদিরেই মারার কথা।
তিনি বলেন, সেদিন নিয়াজুলকে যে যেভাবে পারছিলো মারছিলো। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে লাইসেন্স করা পিস্তল বের করলো। সেই পিস্তলও ছিনতাই করা হলো। তখন এ খবর যখন আসলো তখন স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিয়াজুলকে রক্ষা করতে গেলো। তখন তাদের উপরও হামলা করা হলো।
শামীম ওসমান বলেন, দুটি পত্রিকা ছাড়া বাকী সব পত্রিকাই সেদিন লিখেছিলো আইভীকে নয় মূলত নিয়াজুলকেই হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো। ভিডিও ফুটেজে সেটা প্রমাণিত হয়েছিলো। উনি থেমে গেলেন। বুঝলেন ধরা খেয়ে গেলেন। হঠাৎ করে ২২ মাস পরে আবার কেন লাফালাফি? নারায়ণগঞ্জে একটা অডিও আপলোড হয়েছে। সেই অডিওতে জানা গেলো নারায়ণগঞ্জে নাশকতা চালাবে। তল্লার দিকে গোপন মিটিং করা হচ্ছিলো। সেদিন মাইনুদ্দিন সাহেবসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো।
তিনি বলেন, ওই অডিও থেকে জানলাম বুঝলাম কীভাবে জামায়াতের সাথে তারা আঁতাত করছিলো। মাইনুদ্দিন সাহেব নিজে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছিলেন, মেয়র আইভী আমাদেরই লোক। তাই তাকে দিয়েছিলাম মেয়র হিসেবে। তিনি বলেছিলেন, শামীম ওসমান থাকলে আমরা সুবিধা করতে পারবো না। তাই আইভীকে দিয়েছিলাম। তিনি আরও বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের ছেলেরা যখন কোথাও জন্ম নিববন্ধন পাচ্ছিলেন না তখন এই তিনিই তাদেরকে দিয়েছিলেন জন্মনিবন্ধন।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোঃ শহীদ বাদল।
এছাড়াও এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশীদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান স্বপন, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, মজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ফতুল্লা থানার সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল প্রমূখ।