সকাল নারায়নগঞ্জঃ নৌ-পথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই বন্ধ করাসহ মোট ১১দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন।বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সরদার আলমগীর মাস্টারের সভাপতিত্বে বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে ১০টায় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় নৌযান শ্রমিকদের ঘোষিত এসব দাবি না মানলে আগামী ২৯ নভেম্বর ধর্মঘটের মাধ্যমে সারা দেশে নৌ চলাচল বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয় শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার বলেন, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন এক লাক টাকা কোথাও তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু আমরা যারা পরিবার পরিজনের মায়া ত্যাগ করে নদীতে নদীতে কাজ করি আমাদের বেতন মাত্র আট থেকে দশ হাজার টাকা। এছাড়া অমাদের নানাভাবে প্রতারিত হতে হচ্ছে মালিক শ্রেণির কাছ থেকে। তাই আমরা ১১ দফা দাবি কয়েটি দাবি উপস্থাপন করেছি নৌযান মালিক ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে। এসব দাবি না মানলে সারা দেশে নৌযান শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিবে।
বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের ঘোষিত ১১ দফা দাবিগুলো হলো-নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারীদের খোরাকী ভাতা ফ্রি করতে হবে ও নূন্যতম মজুরী ২০ হাজার টাকা করতে হবে। মাস্টার ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় ও ডিপিডিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সকল প্রকার অনিয়ম বন্ধ করতে হবে এবং কোর্স চলাকালে শ্রমিকদের ছুটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। নৌ শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসালয় করতে হবে। নৌপথে মোবাইল কোর্টের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নৌ শ্রমিকের মৃত্যু হলে ১২ লক্ষ টাকা মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ভারতগামী শ্রমিকদের লোকাল এজেন্টের মাধ্যমে ল্যন্ডিং পাশ সার্ভিস ভিসা ও জাহাজের ফ্রিজিং ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের (শ্রমিকদের) সুবিধা মতো স্থানে বাজার ও অন্যান্য কাজের জন্য আলাদা নৌকার ব্যবস্থা করতে হবে।
শীতলক্ষ্যা নদীর নিতাইগঞ্জ, বরফকল, নবীগঞ্জ দুইপারে ও ঢাকেশ্বরী সোনাচড়া ডগে বিআইডব্লিউটিসি’র ডুবন্ত ফেরি সরিয়ে নদীর চ্যানেল ঠিক করতে হবে। চট্টগ্রাম, মংলা, পায়রা বন্দর, বরিশাল, বাগবাড়ী, নোয়াপাড়া, সুনামগঞ্জ, আশুগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে সকল শুকনো নৌপথ ড্রেজিং করতে হবে। বালুবাহী ও ছোট পণ্যবাহী জাহাজের শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জাহাজে কর্মরত সকল শ্রমিক ও কর্মচারীদের ৮ ঘন্টার অধিক কাজের জন্য ওভারটাইম হিসাব করে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে। যাত্রীবাহী লঞ্চের শ্রমিক কর্মচারীদের বাদে সকল নৌযান শ্রমিক কর্মচারিদের ঈদের পূর্বে ছুটি ঘোষণা করতে হবে ও মে দিবসে সকলের ছুটি গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধনে আর বক্তব্য রাখেন,কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ নৌযান কর্মচারী ইউনিয়নের খাদ্যপণ্য সমিতির সভাপতি ইদ্রিস খান, তারবো শাখার সভাপতি জালাল আহম্মেদ, কাওটাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন,সহ সভাপতি আব্বাস হাওলাদার,সহ সভাপতি আবুল কালাম,দাউদকান্দী শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মাস্টার,নৌ-যান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ সম্পাদক মোঃ গাজী লিটন, ঘাট শ্রমিকলীগ নেতা মোঃ শাহালম প্রমুখ।