সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
মেজর সিনহা রাশেদ খান খুনের রহস্য উদঘাটন। ওসি প্রদীপের ভিডিও সাক্ষাৎকারেই সর্বনাশ ঘটে!“এসপির ত্রিমুখী নিশ্ছিদ্র ছকেই মেজর সিনহার নৃশংস হত্যাকান্ড।
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা টানা কয়েকদিন ইয়াবা বাণিজ্যের নেপথ্য কাহিনী নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরিকালেও বিপদমুক্ত’ ছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমারের সাক্ষাৎকার রেকর্ড করাটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
ক্রসফায়ারের নামে নৃশংসভাবে খুন করা অসংখ্য মানুষের রক্তে রঞ্জিত প্রদীপ কুমারও ভিডিও সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় বারবারই কেঁপে উঠেন। মেজর সিনহা’র তথ্যবহুল প্রশ্নের পর প্রশ্নে চরম অস্বস্তিতে পড়েন ওসি। নানা অজুহাতে ভিডিও সাক্ষাৎকার এড়ানোর সব কৌশল খাটিয়েও ব্যর্থ ওসি প্রদীপ বাধ্য হয়েই প্রশ্নবানে জর্জরিত হতে থাকেন, ভিডিওচিত্রে মেজরের উদঘাটন করা নানা তথ্যের সামনে সীমাহীন নাস্তানাবুদ হন তিনি।
মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের দিন বিকেল চারটার দিকে টেকনাফের বহুল বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ওই ডকুমেন্টারি ভিডিও সাক্ষাৎকারের ফাঁদে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানায়, ক্রসফায়ারে অতিমাত্রায় উৎসাহী ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগিরা ইয়াবা বাজারজাত ও পাচারের ক্ষেত্রেও প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকার কথা স্বীকার করতেও বাধ্য হন।
সফল সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেই মেজর সিনহা আর একদণ্ড সময় ক্ষেপণ করেননি। ঝড়ের বেগে থানা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের গাড়িতে উঠে বসেন। তার সঙ্গে ভিডিও রেকর্ডিংয়ে ব্যস্ত থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতও ক্যামেরা, ট্রাইপড, ব্যাগ গোছাতে গোছাতেই ছুটে গিয়ে গাড়িতে উঠতেই টেকনাফ সদর ছেড়ে গাড়িটি ছুটতে থাকে উত্তর দিকে, বাহারছড়ার পথে।
বাহারছড়া সংলগ্ন মারিসঘোণা এলাকাতেই বসবাস করেন চলচ্চিত্রের ফাইটিং গ্রুপ পরিচালনাকারী ইলিয়াস কোবরা। হঠাত তার টেলিফোনে করা আমন্ত্রণ পুরোপুরি এড়িয়ে যেতে পারেননি মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এদিকে থানা থেকে মেজর সিনহা বেরিয়ে যেতেই ওসি প্রদীপ অচিরেই বড় রকমের বিপদের আশঙ্কায় তৎক্ষনাত কক্সবাজারের এসপি মাসুদকে ফোন করে বিস্তারিত জানিয়ে দেন। সব শুনে এসপি নিজেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
কয়েক মিনিটেই এসপির নির্দেশনায় তৈরি হয় মেজর সিনহা’র নৃশংস হত্যার নিশ্ছিদ্র পরিকল্পনা।
আলাপ আলোচনা শেষে এসপি-ওসি এমনভাবেই ত্রিমুখী মার্ডার মিশন সাজিয়েছিল- সেই ফাঁদ থেকে মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের প্রাণে বাঁচার কোন সুযোগই ছিল না।