সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
সরকারী প্রণোদনাসহ ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের ১৪৫টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
সোমবার (২৯ই জুন) সকালে নগরীর চাষাড়া নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সিদ্ধিরগঞ্জের ১৪৫টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সরকারী প্রণোদনাসহ ৬ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধনে সভাপতিত্বে করেন, সংগঠনের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের মহামারীতে থমকে দাঁড়িয়েছে সারা পৃথিবী। এই করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ প্রতিরোধে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা মোতাবেক গত ১৭ই মার্চ ২০২০ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সিদ্ধিরগঞ্জের ১৪৫ টি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় বন্ধ হয়ে গেছে, যার কারণে চরম ভাবে আর্থিক সংকটে পড়েছে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক কর্মচারীরা। যার ফলে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত প্রায় ২,৫০০ শিক্ষক-কর্মচারী আজ মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় এবং লকডাউন এর কারণে শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশনি ও করতে পারছে না। প্রায় ৯৫% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাসাবাড়িতে পরিচালিত হয়। বাড়ি ভাড়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন, বিদ্যুৎ ও পানির বিল পরিশোধ করতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের মাসিক টিউশন ফি থেকে। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকার কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকারা অর্থনৈতিকভাবে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। কোন শিক্ষক না পারে কারো কাছে হাত পাততে, না পারে লাইনে দাঁড়িয়ে সাহায্য নিতে। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে আজ শিক্ষকরা রাস্তায় নেমেছে। তাদের কষ্টের কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে। আমরা আশাবাদী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবিকভাবে শিক্ষক- কর্মচারীদের দিকে সুদৃষ্টি দেবেন এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিবেন।
সিদ্বিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের ৬ দফা দাবিগুলো – ১. নন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মত কিন্ডার গার্টেন শিক্ষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হোক। ২. করোনা ভাইরাস এর এই দুঃসময় উত্তরনে কিন্ডার গার্টেন ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রণোদনার ব্যবস্থা করণ। যাহা সহজ শর্তে ঋণ হিসাবে দেওয়া যেতে পারে। ৩. কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের জন্য রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করণ। ৪. করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কমে গেলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করণ।৫. সহজ শর্তে কিন্ডারগার্টেন স্কুল সমূহকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে।৬. প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ( পিইসি) পরীক্ষার মতো নিজের স্কুলের নামে জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি এম.এ সিদ্দিক মিয়া ও মহাসচিব শেখ মিজনুর রহমান, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব জি.এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল এন্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল ইকবাল বাহার চৌধুরী ও শিক্ষা সচিব প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ আব্দুল ওদুদ, রূপগঞ্জ কিন্ডারগার্টেন ও শিক্ষা উন্নয়ন সমিতির মহাসচিব লায়ন সালেহ আহম্মদ, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারন সম্পাদক জাকির হুসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আরিফ হোসেন ঢালী, সাংবাদিক ও শিফা ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন স্বপন সহ ১৪৫ টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীবৃন্দ।