সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
১৬ জুন চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে আলোচিত বোমা হামলা মামলায় কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু ও গ্রেফতার শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েলের উপস্থিতিতে ৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বুধবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহ্ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
এদিন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, সুলতান ফারুক, হুমায়ূন খালিদ, লুৎফর রহমান, মোকাররম হোসেন, খালিদ হাসান, হুমায়ূন কবির, ফরিদ উদ্দিন, তানজিলুর রহমান এবং সফিকুর রহমান।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. আব্দুর রহিম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাক্ষ্যগ্রহণকালে আদালতে বোমা হামলা মামলার আসামী কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু এবং শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে এই মামলায় শকু জামিনে রয়েছেন।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে আদালতে ছিলেন অ্যাড. রফিক আহমেদ, অ্যাড. আকবর হোসেন।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে সবচে’ ঘৃণিত ও ভয়াবহ বোমা হামলা চালানো হয়েছিল ২০০১ সালের ১৬ জুনে। যা আজও অনেককে করে তুলে শিহরিত। চাষাড়ার শহীদ মিনারের পাশে আওয়ামী লীগের অফিসে ওই বর্বরোচিত বোমা হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মী নারী-পুরুষসহ ২০ নিহত হন।
ওই বোমা হামলা ঘটনার ১৮ বছর পেরিয়ে গেলেও এই ঘটনার বিচার এখনও পায়নি নিহতের স্বজনেরা।
অভিযোগ রয়েছে, এই বোমা হামলার ঘটনায় ১৮ বছর ধরে কেবল রাজনীতিই হয়েছে, বিচারের দাবিতে জোরালো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি আজও কেউ।
বোমা হামলা ঘটনার পর দায়ের করা দু’টি মামলায় আদালতে চার্জশীট দেয়া হয়েলেও বিচার কার্য সম্পন্ন করা এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে সূত্র বলছে, চার্জশীট প্রদানের পর থেকে এখনও পর্যন্ত স্বাক্ষ্য গ্রহণই শেষ করতে পারেনি। যার কারণে এই মামলার রায় প্রদান করা সম্ভব হয়নি ১৮ বছরেও।
১৬ জুন বোমা হামলায় ২০জন নিহত হওয়া ছাড়াও আহত হয়েছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ শতাধিক নেতাকর্মী। ওইদিন চাষাড়া বিজয় স্তম্ভের পাশে আওয়ামীলীগ অফিসে এমপি শামীম ওসমানের পূর্ব নির্ধারিত গণসংযোগ কর্মসূচি চলাকালে এ বোমা হামলা চালানো হয়।
বোমা হামলার ঘটনার পরদিনই শহর (বর্তমানে মহানগর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খোকন সাহা বাদী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করে হত্যা এবং বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা করেন। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করেন।
আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এর এক যুগ পর তথা ২০১৩ সালে ২ মে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা ৯৪৭ পাতার চার্জশিট প্রদান করে। চার্জশিটে বিএনপির ৩১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং অভিযুক্ত করা হয় ৬ জনকে।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানার ঝিলটুলী গ্রামের নজরুল বারীর ছেলে আনিসুল মোরসালিন এবং তার ভাই মাহবুবুল মোত্তাকিন। তারা দুজন ভারতের কারাগারে রয়েছে। মামলায় আরেকজন আসামী ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিড ও মাহবুবুল্লাহ তপনের ছোট ভাই ভাই শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল। তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ মামলার আরেক আসামী হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর চাষাড়া এলাকার ওবায়দুল হক শয্যাশায়ী এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেমের ছোট ভাই ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু রয়েছেন জামিনে।