সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
আনন্দধামের চেয়ারম্যান মুঃ তানভীর হায়দার খাঁনের দাদার আজ ৫ই মার্চ নিখিল ভারত কংগ্রেস নেতা ও শের-এ-বাংলা এ.কে.ফযলুল হকের ঘনিষ্ঠ সহচর, বঙ্গীয় আইন পরিষেদের সদস্য, নারায়নগঞ্জ মহকুমার সাবেক এম.এল.এ, আব্দুস সামাদ খানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৩ সালের এই দিনে প্রয়াত আব্দুস সামাদ খান ইহলোক ত্যাগ করেন।মরহুম আব্দুস সামাদ খান ১৮৯৭ সালে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থানার কায়েতপাড়ার পুর্বগ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম আব্দুল গনি খান।
মরহুম আব্দুস সামাদ খান বাংলার বিখ্যাত বার ভুইয়া আনোয়ার খান এর ১০ম বংশধর। এই আনোয়ার খান বাংলার ইতিসের বিখ্যাত ঈসা খানের ভাতিজা ও মুঘল যুগের ভাটি অঞ্চলের স্বাধীন রাজা সোলেয়মান খানের দৌহিত্র।সামাদ খান পেশাগত জীবনে আইনজীবি ছিলেন। তিনি প্রথমে ঢাকা কোর্টে ও পরবর্তিতে নারায়নগঞ্জ কোর্টে নিয়মিত প্রেকটিস করতেন। তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অবিভক্ত ভারতের কংগ্রেস রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। সামাদ খান ১৯২০ সালে মহত্মা গান্ধীর ডাকে ব্রিটিশ বিরোধী অসহযোগ অন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসুচীর বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।
তিনি আলি ব্রাদারের নেতৃত্বে ১৯১৮ সালে খেলাফত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন ১৯২৪ সালে শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের সভাপতিত্বে বঙ্গ প্রজা কনফারেন্সে সামাদ খান ঢাকা জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন এবং নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতির অন্যতম নেতা নির্বাচিত হন।১৯২৬ সালে সামাদ খান শেরে বাংলার সাথে মানিকগঞ্জের ঘিওর হাটে ঐতিহাসিক প্রজা আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ভুমিকা পালন করেন। ১৯৩৭ সালে অবিভক্ত বাংলার মুখ্য মন্ত্রি শেরে বাংলা বঙ্গীয় আইন সভায় বঙ্গীয় কৃষি ঋন আইন পাশ করেন। মরহুম সামাদ খান উক্ত আইনের অধীনে ঋন সালিশী বোর্ড গঠনে মুখ্য ভুমিকা পালন করেন।
পরবর্তিতে সামাদ খান কংগ্রেস ত্যাগ করে শের এ বাংলার নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন।১৯৫৪ সালে আব্দুস সামাদ খান যুক্তফ্রন্ট প্রার্থী হিসাবে নারায়নগঞ্জ রুপগঞ্জ আসন হতে প্রতিদন্দ্বি সমস্ত প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত করে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। শেরে বাংলা তার নির্বাচনী প্রচারনায় অংশগ্রহন করে ছিলেন। নির্বাচন পরবর্তি যুক্তফ্রন্ট সংসদীয় সভায় জনাব আব্দুস সামাদ খানকে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ডিপুটি স্পিকার মনোনীত করা হয়। কিন্তু দূর্ভাগ্যবসত তিনি সংসদের প্রথম অধীবেশনেই ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। কিন্তু তথাপিও তিনি কিছুটা সুস্থ হলে সংসদে পুরো মেয়াদকাল নিয়মিত অধীবেশনে বসতেন।মরহুম আব্দুস সামাদ খান ১৯২৭ সালে সিলেটের অধুনা বিলুপ্ত লাখাই পরগনার সর্বশেষ সনদপ্রাপ্ত জমিদার জনাব নুর হুসাইন দুদু মিয়ার কন্যা বশিরা খানম কে বিয়ে করে নারায়নগঞ্জের গলাচিপার ৪০ নং কলেজ রোড খান বাড়িতে আজীবন বসবাস করেছেন।
তিনি একজন অতিথি পরায়ন ব্যক্তি ছিলেন। তার গলাচিপা বাড়িতে আতিথেয়তা গ্রহন করেছেন যারা তন্মধ্যে শের-এ-বাংলা ফজলুল হক, আতাউর রহমান খান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ক্যাপ্টেন মনসুর আলি, মোহন মিয়া, নান্না মিয়া সহ অনেক জাতীয় পর্যায়ের ব্যক্তিত্ব।