এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, ২০১৪ সালের ৩০এপ্রিল ভারতের রাজধানী দিল্লীর দেরাদুন শহরে থাকা অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন তিনি। সে সময় তাঁর মৃত্যুতে দলমত নির্বিশেষে সকল অঙ্গনে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে নববধূকে বাড়িতে ফেলে ছুটে চলে যাওয়া সর্বপ্রথম বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ট সৈনিক।
৩০শে এপ্রিল রবিবার নারায়ণগঞ্জ ৫ (সদর বন্দর) আসনের চারবারের জাতীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমানের ৯ম মৃত্যুবাষির্কী।
২৯শে এপ্রিল শনিবার রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে নাসিম ওসমানের রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের কাছে দোয়া কামনা করেছেন মরহুমের স্ত্রী পারভীন ওসমান ও ছেলে আজমেরী ওসমানসহ পরিবারের সদস্যরা।
আল্লামা ইকবাল রোড এলাকায় দিনব্যাপী কোরআন তেলোয়াত করা হবে। মসজিদ-মাদ্রাসায় বিশেষ দোয়া করাসহ দু:স্থদের মাঝে বিতরণ করা হবে রান্না করা খাবার। এছাড়াও সদর-বন্দরসহ বিভিন্ন থানা, উপজেলা ও এলাকাগুলোতে নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
এদিকে, রবিবার ৩০ এপ্রিল সকাল ১১টায় বন্দরে পুরান বন্দর চৌধুরী বাড়ি এলাকায় অবস্থিত নাসিম ওসমান মডেল হাইস্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পক্ষ থেকে একটি দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রয়াত নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জের অন্যতম রাজনৈতিক ওসমান পরিবারের বড় সন্তান। তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, আওয়ামীলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরণোত্তর) প্রয়াত সাংসদ এ.কে.এম শামসুজ্জোহা ও মা ভাষা সৈনিক ও রত্মগর্ভা নাগিনা জোহা। প্রয়াত এ.কে.এম সামসুজ্জোহার পাঁচ সন্তানের মধ্যে জেষ্ঠ্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত নাসিম ওসমান। ১৯৫৩ সালের ৩১ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নারায়ণগঞ্জের গণমানুষের প্রাণের নেতা।
তিনি ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সুইসাইড স্কোয়াডে যুদ্ধ করেছেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর নববিবাহিতা বধূকে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
প্রয়াত নাসিম ওসমান ১৯৮৪ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এবং ২০০৮ ও ২০১৪ সালে মহাজোট প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে তিনি সর্বাধিক ৪ বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদের সদস্য।
ছোট দুই ভাই নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
২০১৪ সালের ৩০শে এপ্রিল নাসিম ওসমান এর আকস্মিক মৃত্যুতে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব রাখতে গিয়ে অজোড়ে কেঁদে ছিলেন সংসদ নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।