• সকাল নারায়ণগঞ্জ

এমনিতেই বছরের অধিকাংশ সময়ই পানির নীচে থাকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওতাধীন ইসদাইর-গাবতলী এলাকা। ফলে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয় এসব এলাকার বাসিন্দাদের।

তার উপর চলাচলের মূল সড়ক ও ড্রেনের উপর ইট-বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী রেখে ব্যবসা করছে সরকারী দলের পাতিনেতা খ্যাত সালাম মাহমুদ লালন। ফলে ড্রেন বন্ধ হয়ে নতুন করে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। একইসাথে যান চলাচলে ও জনসাধারণের হাটা-চলায় ভোগান্তির অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, রাজণৈতিক অঙ্গনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবীদ হিসাবে পরিচিত লাভ করলেও তার নির্বাচনী আসনের আওতাধীন ডিএনডি এলাকাসহ ইসদাইর-গাবতলী এলাকায় বছরের বেশীর ভাগ সময়ই জলাবদ্ধতা থাকে। মূলত ময়লা ফেলে ড্রেন বন্ধ করে রাখার কারণে এবং পানি নিস্কাশনের সু-ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলে দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পানির এই সমস্যা সমাধানে অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তবে, লালনদের মতো কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও চুনো পুটি নেতারা সরকারী দলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে সড়ক দখল করে এবং ড্রেনের উপর ইট-বালু রেখে ব্যবসা করার কারণে জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকাবাসীদের।

সচেতন মহল বলছে, আইন অনুযায়ী সড়কে ইট, বালু, সিমেন্ট ও পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রাখা বেআইনি। কিন্তু এ বিধানের ধার ধারেনা লালনের মতো সন্ত্রাসীরা। তাই ইট-বালুসহ নির্মাণ সামগ্রী রাস্তা ও ড্রেনের ওপর রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলে আসলেও ফতুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো জোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলেও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠেছে।

সোমবার (১৩ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইসদাইর-গাবতলী এলাকায় ৭-৮ স্পটে রাস্তা ও ড্রেনের উপর নির্মাণ সামগ্রী রেখে ব্যবসা করছে মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. সালাম মাহামুদ লালন ওরফে সন্ত্রাসী ও মাদক স¤্রাট লালন। ভবন নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত ইট, ভরাট বালু, সিলেকশন বালু সড়কের উপর মজুদ করে রেখেছে লালন। ফলে ওই সড়কে যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে। ওইসব নির্মাণ সামগ্রীর কারণে পথচারীরা হাটা-চলা করতেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, সড়কের উপর এসব নির্মাণ সামগ্রী রেখে জনসাধারণের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটিয়ে দিব্যি ব্যবসা করছে পুলিশের হাতে মাদক সহ কয়েকবার গ্রেফতার হওয়া কুখ্যাত সন্ত্রাসী, মাদক স¤্রাট লালন। রাস্তার পাশাপাশি ড্রেনের উপর এসব নির্মাণ সামগ্রী রাখায় ড্রেন বন্ধ হয়ে প্রায়ই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় ও তাদের পিছনে পিছনে ঘুরে সরকারী দলের নাম বিক্রি করা এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয় না বলেও জানায় এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পথচারী বলেন, অনেকদিন ধরেই এ সড়কের উপর পাথর, বালু, ইট ও কংক্রিট রেখে ব্যবসা করছে লালন। এতে সাধারণ পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। তবে, সন্ত্রাসী ও মাদক স¤্রাট হওয়ায় সরাসরি তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো প্রতিবাদ করেনা।

একজন মুদি দোকানদার বলেন, দেখেন রাস্তার উপর কিভাবে বালু রেখে দিয়েছে রশিদের ছেলে লালন। মানুষই যাতায়াত করতে পারেনা, আমরা কিভাবে ব্যবসা করবো দেখেন।

রিকশাচালক রহিম মিয়া বলেন, কি বলবো, আমরা গরিব মানুষ। এ রাস্তার পাশ এমনিতেই কম। তার উপর মালামাল রেখে রাস্তা আরো ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রায়ই রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহনের সাথে সংঘর্ষের ফলে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা এর আগে বেশ কয়েকবার লালন সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শুনে না। আমরা আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবকেও এ বিষয়ে জানিয়েছি।

আগামী শনিবার স্থানীয় মুরুব্বীদের নিয়ে এসব বিষয়ে আমাদের একটি বৈঠক আছে, সেদিন সড়ক ও ড্রেন দখল করে রাখা এই সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। এবং সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।

একই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার কামরুল হাসান কল রিসিভ করেননি এবং অভিযুক্ত লালনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।