‘শহরকে হকার ও যানজট মুক্ত কর, সুন্দর বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৫টি দাবি উল্লেখ করে, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ সংগঠন। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় চাষাঢ়া শহীদ মিনারের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের দাবি জানিয়েছে লিফলেট বিতরণ করেছেন। তাদের দাবি ‘চাষাঢ়া পুলিশ ফাঁড়ি ও ডাক বাংলার ছেড়ে দেওয়া জায়গা দ্রুত পাকা করণ করতে হবে, মৌমিতা বাসসহ সকল অবৈধ ষ্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে হবে, বঙ্গবন্ধু সড়ক, মীরজুমলা রোড, শায়েস্তা খাঁন সড়ক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী রোড, সিরাজউদ্দৌলা সড়ক ও ফুটপাথ হকার মুক্ত কর এবয় প্রকৃত হকারদের পুর্নবাসন কর, ব্যাটারী চালিত রিক্সা,অটো, মিশুক চলাচল আইনি শৃঙ্খলায় আনতে হবে, ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মোটর সাইকেল সড়ক ও ফুটপাথে রাখা নিষিদ্ধ করতে হবে।’
এ সময় মানববন্ধনে আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি নুরউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, জাসদ সভাপতি মহুর আলী চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের উপদেষ্ঠা এড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, সহ-সভাপতি কুতুবউদ্দিন আহমেদ, বাবুল, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন, মো. হোসেন কাজল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান, সহ সাধারণ সম্পাদক শিপলু, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা, ক্রীড়া সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর খোকন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ওলি আহমেদ ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন, সুলতান, লিটন, মোস্তফা কামল, মহিলা নেত্রী হালিমা আক্তার বিথী প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের উপদেষ্ঠা এড. মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আমাদের সুন্দর এই নারায়ণগঞ্জে কোন সন্ত্রাস থাকবে না, এখানে কোন যানজট থাকবে না, এখানে ফুটপাত মুক্ত থাকবে না। আমরা এটাই স্বপ্ন দেখি, বাহিরে থেকে মানুষ আসবে আমাদের এমন নারায়ণগঞ্জ দেখবে এটাই চাই। কিন্তু আজকে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে নারায়ণগঞ্জকে ডাম্পিং পয়েন্ট বানানো হচ্ছে। একদিকে মৌমিতা পরিবহন যার এখানে চলাচলের কোন অধিকার নাই, তাদের এরিয়া সাইনবোর্ড পর্যন্ত। কিন্তু তা না করে, কোন সুতার টানে? কাকে ম্যানেজ করে? কার সাথে আর্থিক লেনদেন করে? এই মৌমিতা নারায়ণগঞ্জ শহরে ঢুকে। এটা আমরা জানতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, উনি তো রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি ও বিআরটিএ’র সভাপতি।এসব বিষয় ন্যস্ত করা আছে তার উপর কিন্তু উনি সেটা করতে ব্যর্থ। জেলা প্রশাসক মহোদয় ‘অনাবিল’ যেতে পারলে ‘মৌমিতা’ কেনো যাবে না? কি সার্থ আছো, কাদের কাছে জিম্মি হয়েছেন এটা আমরা জানতে চাই। আমরা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম কিন্তু আজকেও দেখছি মৌমিতা চলছে। এটা তো কাঙ্খিত ছিলো না। তাহলে আপনি কোন জেলার জেলা প্রশাসক? আপনি নারায়ণগঞ্জবাসীর আত্মার কথা জানেন না, আপনি মানুষের পার্লস বুঝেন না? শুধু কি ফাইলে সাইন করার জন্য নারায়ণগঞ্জে এসেছেন। আমাদের এবারের আন্দোলন হলো। আপনি যে ব্যর্থ এই কথাটা সরকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়ে দিবো। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখবো আপনার জেলা প্রশাসক ব্যর্থ। নারায়ণগঞ্জবাসী আজ একটা সিন্ডিকেটে অসহায় হয়ে আছে। আমরা সড়ক মন্ত্রীর কাছে লিখবো। আমরা জনপ্রশাসনের কাছে লিখবো। শুধু মৌমিতা না, মেয়াদ উত্তির্ণ কোন বাস নারায়ণগঞ্জ শহরে চলবে না। আপনি ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বাস ডুবাতে চেয়েছেন আমরা ভাসাতে চাই। আপনি (ডিসি) নারায়ণগঞ্জে একটি সুষ্ঠ রোড ম্যানেজ করুন, যেখানে নারায়ণগঞ্জের যানবাহন চলবে।
নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি নুরউদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি অবহেলিত শহর। এটাকে ধনী জেলা হিসেবে গণ্য করা হয়। রাষ্ট্রের কোষাগাড়ে যে আয় হয় তার ২৮ শতাংশ নারায়ণগঞ্জ থেকে হয়। তবুও নারায়ণগঞ্জ অবহেলার শিকার হয়। শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গাসহ ৬টি নদী আজ কলকারখার বজ্রে ড্রেনে পরিণত হয়েছে। এই নদীর পানির সামনে যাওয়া তো দূরের কথা, পাশ দিয়ে হেটে গেলেও মুখে রোমাল ধরতে হয়। সরকারের কোষাগার পূরণ করার পরেও নারায়ণগঞ্জ ২য় শ্রেণীর জেলা। আজকে আমাদের মানবন্ধন যানজট নিরসনের জন্য, কাউকে অসম্মান করার জন্য নয়। যানজট নিরসনের জন্য চাষাঢ়া ডাকবাংলো সরিয়ে নেয়ার আন্দোলন করার পর সেটি কিছুটা রাস্তা সরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় ৭মাস হয়ে গেলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশনরও কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেন না। যার ফলে প্রতিদিনিই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছু্ আগেও একটা তরুণ যুবক মারা গেছে, তার পূর্বে পিতা ও কণ্যা নিহত হয়েছেন। আমরা আহবান রাখবো অতি দ্রুত এই সমস্যা গুলোর সমাধান করবেন। আমরা চাই একটা সুন্দর নারায়ণগঞ্জ।