নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালে দালাল ও বহিরাগতদের দাপটে সাধারণ রোগী অসহায়।বছরের পর বছর ধরে চলছে দালালদের দৌরাত্ম্য। এদিকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। ভুক্তভোগীরা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, এটা একটা বিরাট সিন্ডিকেট।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢামেকের জরুরি বিভাগ, বিভিন্ন ওয়ার্ড, সিটিস্ক্যান, এমআরআই এবং এক্সরেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা কক্ষের সামনে হাসপাতালের কর্মচারী নয় বরং বিভিন্ন শ্রেণির দালাল ঘোরাঘুরি করছেন।এদের কেউ কেউ নিজেদের হাসপাতালের কর্মচারী হিসেবে পরিচয় দেন। রফিক নামে এমন একজনের সঙ্গে দেখা হয় প্রতিবেদকের।পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি রফিক এখানকার স্টাফ।’ কোন বিভাগের জানতে চাইলে বলেন, ‘মর্গের স্টাফ। মর্গের হলে ইমার্জেন্সিতে কী করছেন- প্রতিবেদকের এই প্রশ্নে রফিক দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়েন। রফিকদের মতো অনেকে স্টাফ পরিচয়ের পাশাপাশি কেউ কেউ নিজেদের বিভিন্ন চিকিৎসকদের সহকারী পরিচয় দেন।
সোহাগ নামের এক যুবক বলেন, নভেম্বরের ৬ তারিখে অপারেশন করানোর কথা বলে কেবিনে ভর্তির জন্য আমার কাছ থেকে ‘লুৎফর’ নামের এক ওয়ার্ডবয় মোট সাড়ে ৩ হাজার টাকা নেন। অথচ রশিদ দিয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকার। বাকি দুই হাজার টাকার রশিদ দেয়নি। এরপর ডাক্তার অপারেশনের আগে বিভিন্ন টেস্ট করতে বলেন। সেসব টেস্ট এই হাসপাতালে নাকি করানোর ব্যবস্থা নাই। বাইরে থেকে করার কথা বলেন ডাক্তার। তারপর টেস্টের কাগজ আমার হাতে না দিয়ে ‘আলতাফ’ নামের একজনকে দেয়। সেই আলতাফ বাবার অপারেশনের জন্য বিভিন্ন ওষুধ কেনার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা নেন। কিন্তু রসিদ দিতে বললে রফিক বলেন, ‘আপনার বাবার অপারেশন হলেই তো হবে, রসিদ দিয়ে কী করবেন?’ রসিদ ছাড়া আমি তাকে টাকা দেইনি।
জানা গেছে, প্যাথলজিক্যাল টেস্ট, হাসপাতালে ভর্তি, বেড বা কেবিন পাওয়া, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এসব বিষয়ে রোগী বা রোগীর স্বজনদের দালাল খুঁজতে হয় না। দালালরাই রোগীদের পাশে এসে দাঁড়ায়। পুরো হাসপাতালজুড়ে রয়েছ এদের অবাধ বিচরণ।