জ্বালানির দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাস ভাড়া এক লাফে ২০ টাকা বেড়েছে। রোববার সকাল থেকে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ক্ষুদ্ধ যাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা চলাচলরত বন্ধন ও উৎসব পরিবহন শনিবার সারাদিন ৪৫ টাকা হিসেবে ভাড়া গ্রহণ করলেও রোববার সকাল থেকেই সেই ভাড়া ৬৫ টাকা গ্রহণ করছে। একইভাবে চাষাড়া থেকে চলাচলরত এসি বাস শীতল পরিবহন পূর্বের ভাড়া ৬৫ টাকা হলেও রোববার সকাল থেকেই সেই বাড়া বৃদ্ধি করে ৮০ টাকা গ্রহণ করছে। এছাড়া সরকারি পরিবহন বিআরটিসি পূর্বের ভাড়া ৪০ টাকার পরিবর্তে ৬০ টাকা গ্রহণ করতে দেখা গেছে।
২ নম্বর রেল গেইট এলাকায় বাস কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট নিয়ে প্রায় সকল যাত্রীই ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা মন্তব্য করতে করতে বাসে উঠতে দেখা গেছে।
এক চাকরিজীবী নারী ভাড়া বৃদ্ধির জোরালো প্রতিবাদ করে বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের সূরে বলেন, ‘আমরা তো জিম্মি। আমাদের দেশ তো মগের মুল্লুক। প্রতি লিটারে ডিজেলের দাম বাড়ছে ৩৪ টাকা আর একেকজন যাত্রীর কাছ থেকে ভাড়া বাড়িয়েছে ২০ টাকা। আশ্চর্য তো, কার কাছে বলবো? নারায়ণগঞ্জে কি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলতে কিছু আছে? থাকলে এই নৈরাজ্য হচ্ছে কেমনে?’
এমন কঠোর ভাষায় ওই নারী প্রতিবাদ করলেও বাস কাউন্টারে বসে থাকা কয়েকজন পরিবহন মালিক কিংবা কাউন্টারে থাকা কেউ কোনো মন্তব্য করেন নাই।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে এ সময় একজন পরিবহন মালিক বলেন, শনিবার রাতেই পরিবহন নেতারা নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ নেতাদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে
নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাদের সাথে পরামর্শ করেই এই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
‘এই বাড়তি ২০ টাকা কি কোনো বাস মালিক একা খাইবো? এই ২০ টাকার মধ্যে কোন নেতা কত পাইবো কোন কর্তা কত নিবো তা ভাগবাটোয়ারা হইয়া গেছে আগে থেইক্কাই’ এমন মন্তব্য তার।
চাষাড়া এলাকায় বন্ধন বাসের যাত্রী নুর সোহেল জানান, এক লাফে ২০ টাকা ভাড়া বৃদ্ধি মানুষের কষ্ট আরো বাড়াবে।
বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে শীতল ট্রান্সপোর্টের ডিরেক্টর ইব্রাহিম চেঙ্গিস বলেন, ‘আমাদের বিগত দিনের হিসেব অনুযায়ী বাসের মূল ভাড়া আসতো ৭০ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের সুবাদে আমরা ভাড়া নির্ধারণ করেছি ৬৫ টাকা। আমরা হিসেব করে দেখেছি প্রায় ১০৪ টাকা ভাড়া আসে টিকেটপ্রতি। কিন্তু আমরা বোধহয় এতটা বাড়াবো না। ভাড়া ৮০ টাকা করা হয়েছে।
তেলের চাইতে ভাড়া বাড়তি হবার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে আমাদের নারায়ণগঞ্জ থেকে গুলিস্থান যেতে তেল লাগতো ২০ লিটার। এখন সেখানে ২৪ এমনকি ২৮ লিটার তেল লাগে। জ্যামের কারণে এই বাড়তি অপচয়গুলো হচ্ছে। মানুষের কষ্ট হবে এটা বাস্তব, কিন্তু আমাদের তো তাহলে বাস বন্ধ করে ফেলা ছাড়া গতি নেই। তেলের দামের সাথে মবিল, টায়ার, চাকা, পার্টস, স্টাফদের বেতন সব বাড়বে। সুতরাং বাধ্য হয়েই আমাদের ভাড়া বাড়াতে হবে।’