1. [email protected] : সকাল নারায়ণগঞ্জ : সকাল নারায়ণগঞ্জ
  2. [email protected] : skriaz30 :
  3. : wpcron20dc4723 :
এসপি অফিসের মাত্র ১০০ ফুট দূরেই বসে হেরোইন গাঁজার হাট - সকাল নারায়ণগঞ্জ
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট
সাহিত্য-সংস্কৃতি কখনো ধর্মান্ধ হয় না মমিনউল্লা ডেভিডের ২০তম মৃত্যুবার্ষিক উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এর আয়োজন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মো: শাকিল (২৬) নামে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জে ২৭ যানবাহন জব্দ, ২৯ মামলায় লাখ টাকা জরিমানা ১০ দিন যাবৎ নিখোঁজ ঝর্ণা বিশ্বাস সন্ধান চায় পরিবার  বশিষে উদ্দশ্যেে র্গামন্টেস শ্রমকি ফ্রন্টরে নতেৃবৃন্দরে নামেবভ্রিান্তকির সংবাদ প্রকাশরে প্রতবিাদ সংখ্যানুপাতিক হার (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসন দেশের জনগণ মেনে নিবে না পুলিশ ‍সুপারের সাথে ইসলামী আন্দোলনের মতবিনিময় নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন মুশিউর রহমানকে ভৎসনা করেছেন আদালত

এসপি অফিসের মাত্র ১০০ ফুট দূরেই বসে হেরোইন গাঁজার হাট

সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
  • আপডেট শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২
  • ৬৮ Time View
  • সকাল নারায়নগঞ্জ

 

হঠাৎ দেখলে মনে হবে যেন চাল-ডাল-তেলের জন্য টিসিবির লাইনে হাতে টাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অর্ধশত মানুষ। কার আগে কে পণ্য কিনবেন সেজন্য চলছে ধাক্কাধাক্কি আর তর্ক-বিতর্ক। সেই লাইনে দেখা মিলছে দরিদ্র নারী, কমিউনিটি ট্রাফিকের সদস্য, কলেজ শিক্ষার্থী, হকার, ডিম বিক্রেতা,ভ্যানচালক কিংবা ষাটোর্ধ দাড়ি-টুপি পরিহিত মুরব্বিদের।

 

কিন্তু বাস্তবে এটি টিবিসির লাইন নয়, টাকা হাতে এখানে কাড়াকাড়ি চলছে হেরোইন আর গাঁজার জন্য। নগরীর অদূরে চানমারী এলাকায় এমন দৃশ্য প্রতিদিনকার। ভোর ৬টা থেকে মধ্যরাত অবধি মাত্র ৮০ ফিট লম্বা এই সড়কে প্রতিদিন হেরোইন আর গাঁজা বিক্রি হয় কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার।

 

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মাত্র ১০০ ফুট দূরেই বসে এই হেরোইন গাঁজার হাট। শুধু বিক্রিই নয়, সড়কের পাশে বসে লাইন ধরে চলে মাদক সেবনও। জেলা পুলিশ বিভাগ কিংবা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা এখানে নিয়মিত আসেনও; কিন্তু অভিযানের নামে যা হয় তাতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তার নাম দিয়েছেন ‘নাটক’।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা স্থানীয় গণমাধ্যমে চানমারী এলাকার এই ওপেন মাদক ব্যবসা নিয়ে গত কয়েক বছরে শত শত নিউজ আর ভিডিও আপলোড হলেও জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাবি করেন সেখানে কোনো মাদকের স্থায়ী স্পট নেই। তাদের দাবি বিচ্ছিন্নভাবে কেউ বিক্রি করে থাকতে পারে। আর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আওড়াচ্ছেন সেই ‘চর্বিত চর্বন”।

 

শুধু চানমারী এলাকাই নয়, এখান থেকে মাত্র ৫ মিনিটের দূরত্বেই বসে পাইকারি ইয়াবার হাট। নির্মাণাধীন নারায়ণগঞ্জ-আদমজী হাইওয়ে সড়কের পাশে এই ইয়াবার স্পটেও প্রতিদিন বেচাকেনা চলে প্রায় ৫ লাখ টাকার ইয়াবা। যুগান্তরের গত কয়েক দিনের সরেজমিন অনুসন্ধানে এই মাদক ব্যবসা, মাদক সেবনের নতুন ধরন আর মাদক ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার হিসাব রাখার চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেছে।

 

সরেজমিন দেখা গেছে, এ যেন অনেকটা প্রদীপের নিচেই নিকশ কালো অন্ধকার। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের মাত্র ১০০ গজ দূরেই চানমারী সড়কের ওপর বসে হেরোইন আর গাঁজার বাজার। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত অবধি লাইন ধরে রীতিমোত ‘কাড়াকাড়ি’ লাগে মাদকসেবীদের।

 

অথচ আবাসিক এলাকার এই সড়কের ওপরই অবস্থিত একটি কলেজ, মাদ্রাসা ও মসজিদ। শিক্ষার্থী কিংবা এলাকাবাসী কারো পরোয়া করে না মাদক ব্যবসায়ীরা।

 

গত বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কয়েক দফায় ওই সড়কে অবস্থান নিয়ে দেখা মিলল পুরো মাদক ব্যবসার অভিনব কায়দা। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টা, দুপুর থেকে সন্ধ্যা আর সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ৩ শিফটে কাজ করেন এখানকার সেলসম্যানরা। প্রতিটি গ্রুপের প্রত্যেক সেলসম্যান ১ ঘণ্টা পর পর বিক্রির টাকা এনে জমা করেন সুপারভাইজারের কাছে। প্রতি গ্রুপের জন্য এমন একজন করে সুপারভাইজার আছেন।

 

স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে পরিচয় মিলল এমন একজন সুপারভাইজারের, যার নাম শরীফ। সরেজমিন দেখা গেল, ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শরীফের তত্ত্বাবধানে থাকা ৮ জন সেলসম্যান প্রতি ঘণ্টায় হেরোইন ও গাজার বিক্রির টাকা জমা দিচ্ছেন তার (শরীফ) কাছে। শরীফ একটি ছোট সাদা চিরকুটে টাকার পরিমাণ ও সেলসম্যানের নাম লিখে রাবার ব্যান্ডে পেঁচিয়ে তার কাছে জমা রাখছেন। এভাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় শরীফের কাছে জমা হয়ে গেল ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

 

জানা গেল, কোনো কোনো সেলসম্যানদের প্রতি হাজারে দেওয়া হয় ১০০ টাকা আবার কেউ কেউ দৈনিক মজুরি নেয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। তবে প্রতিদিন সেলসম্যানদের ১ পুড়িয়া হেরোইন ফ্রি তে দেওয়া হয়ে থাকে।

 

বেশ কয়েকজন মাদকসেবী জানালেন, এখানে সবাইকেই নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়াতে হয়। এক পুড়িয়া হেরোইনের দাম এখানে ১৫০ টাকা আর এক পুড়িয়া গাঁজার দাম ৩০ টাকা। মাদক সেবনের দৃশ্য দেখে বোঝা গেল মাদক সেবনের ধরনও পাল্টেছে। এখন শুধু হেরোইন বা গাঁজা আলাদাভাবে সেবন না করে দুটো একত্রেই সেবন করেন তারা। এতে নাকি নেশা বেশি হয় তাদের।

 

এদিকে গত মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করেই এই মাদকের হাটে দেখা মিলল মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিমের। হাতে লাঠি নিয়ে প্রবেশ করা ওই টিমের জন্য রাস্তার যানজট ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেল খোদ মাদক ব্যবসায়ীরাই। সেই মাদকের সুপারভাইজার শরীফকে দেখা গেল মোবাইলে কথা বলতে বলতে যে গলি থেকে বের হলেন, সেই গলিতেই প্রবেশ করার মাত্র দেড় মিনিটের মাথায় আবার নিজেদের গাড়ির দিকে রওনা হলো টিমটি।

 

অভিযানের নামে মাত্র ৬ মিনিটের এই টহল শেষ হওয়ার দেড় ঘণ্টা পর সেখানে দেখা মিলল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিমের। চানমারী সড়কে প্রবেশ না করে ডিবির গাড়িটি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ওপরই অবস্থান করল ১২ মিনিট। এরপর এক যুবক ওই গাড়ির সামনে গিয়ে কারো সাথে কথা বলার পরপরই চলে যান পুলিশ সদস্যরা।

 

অপরদিকে এই চানমারী স্পটের কিছু দূরেই অন্য সিন্ডিকেটের দায়িত্বে আছে ইয়াবার ব্যবসা। নারায়ণগঞ্জ-আদমজী নির্মাণাধীন হাইওয়েতে বসে এই ইয়াবার ব্যবসা। যুগান্তরের ক্যামেরা দেখে কেউ কেউ পালালেন আবার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কয়েকজন দূর থেকে হুমকিও দিলেন।

 

এদিকে ওপেন সিক্রেট এই মাদকের বাজার নিয়ে ক্ষোভ আর হতাশার শেষ নেই এলাকাবাসীর। স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, এসপি অফিসের পাশে এমন মাদকের হাট-বাজার কোনো সভ্য দেশে আছে আমরা জানি না। আমাদের লজ্জা হলেও পুলিশের কর্তাদের মনে হয় লজ্জা নেই। এখান থেকে টাকা নেয় না কে? টাকা না নিলে তো এমন মাদকের বাজার থাকার কথা না।

 

এলাকাবাসী জানান, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি পঞ্চায়েত থেকে, মসজিদ কমিটি থেকে। আমরা ধরে পিটিয়ে পুলিশকে খবর দিলে তারা উল্টো এসে বলেন এখন এই মাদক ব্যবসায়ীর চিকিৎসা কে করাবে? আপনারা কেন আইন হাতে তুলেন। আরও সমস্যা হলো কেউ প্রতিবাদ করলে তার বাড়ির সামনেই মাদক ব্যবসা শুরু হয়, না হয় বাড়ির জানালা ভাঙবে, লাইট চুরি হবে, বাড়ির মহিলারা উত্ত্যক্তের শিকার হবে।

 

আরও সংবাদ
© ২০২৩ | সকল স্বত্ব সকাল নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক সংরক্ষিত
DEVELOPED BY RIAZUL