সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
সিলেটে সেনাপ্রধান সিলেটের বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন এবং বন্যা কবলিত মানুষদের সাথে কথা বলেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক ও নিকটবর্তী বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শন ও ত্রান তৎপরতায় অংশ নেন তিনি ।
এ সময় তিনি সেনাবহিনী প্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিরলসভাবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রাখা, জরুরী ত্রাণকার্য পরিচালনা, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মকভাবে আত্মত্যাগের মাধ্যমে সহায়তার নির্দেশনা প্রদান করেন। সেনাবাহিনী প্রধান উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান জানান, আমরা সবাই মিলে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারব। তাই সেনা সদস্যদের সর্বাত্মকভাবে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আন্তরিকতার কাজ করতে হবে। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়েও সকল ধরনের সহায়তা কার্যক্রম প্রদানের আশ্বাস দেন সেনাবাহিনী প্রধান।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৭ জুন ২০২২ তারিখ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিলেট অঞ্চলের ১৭ পদাতিক ডিভিশন সিলেট জেলার সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জয়িন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলা এবং কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছে। সেনাবাহিনীর অন্যান্য ফরমেশন থেকে সিলেট এলাকায় উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য বিভিন্ন নৌযান মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও, কমান্ডো ব্যাটালিয়ানের সদস্যগণ উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। একই সাথে নৌবাহিনীর একটি দল সিলেট এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করেছে।
নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১৮ জুন ২০২২ তারিখ ঘাটাইল অঞ্চল হতে ১৯ পদাতিক ডিভিশন এর ১২৫ জন সেনাসদস্য নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ বিতরণ এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য মোতায়েন রয়েছে।
সেনাবাহিনীর সদস্যগণ গত ১৮ জুন ২০২২ তারিখে সুনামগঞ্জ থেকে এমআইএসটি এর ১৫ জন শিক্ষার্থী এবং আজ ১৯ জুন ২০২২ সুনামগঞ্জের ছাতকে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আনেন। এছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে ২০১০ জন বন্যা দুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রেরণ, ৩৬২৫ জনকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান ও ২২০০ জনের মাঝে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি বন্যার্তদের মাঝে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ এবং ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেল গঠন করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সেনাবাহিনী প্রধান বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।