সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে
২৮ মার্চ বামজোটের অর্ধদিবস হরতাল সফল কর
চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ, গ্রাম ও শহরের সমস্ত গরীব মানুষকে রেশন প্রদান, ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উচ্ছেদ ও গণতন্ত্র-ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ২৮ মার্চ বামজোটের অর্ধদিবস হরতাল সফল করার আহŸান জানিয়ে বাসদের দেশব্যাপী দাবিপক্ষ পালনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এনায়েতনগর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে আজ সকাল ৮ টায় পঞ্চবটি বিসিকের ২ নং গেইটে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ এনায়েতনগর ইউনিয়ন শাখার সংগঠক নূর হোসেন সরদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির আহŸায়ক নিখিল দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ ফতুল্লা থানার সদস্যসচিব এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ।
নিখিল দাস বলেন, চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ খাদপণ্যের দাম উত্তরোত্তর বেড়ে নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে। সরকার কয়েকটি পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এর সুফল খুব সামান্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। ৩০% কর কমলেও ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি মাত্র ৮ টাকা কমে ১৬০ টাকা হয়েছে। যা নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, ২০ মার্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এক কোটি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে নিত্যপণ্য দেয়া শুরু করেছে। টিসিবির ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য দেয়ার কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হলেও কার্ডধারীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে ৪৬০ টাকা দিয়ে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি ডাল ও দুই কেজি চিনি পেয়েছে। যা বাজারমূল্যের বিবেচনায় মাত্র ১৫০ টাকার মত সাশ্রয় হয়েছে। সরকারের এত হাঁক ডাক দেয়ার পর, দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহায়ে এই সামান্য প্রাপ্তিতে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের সময়ে দরিদ্র পীড়িত মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
নিত্যপণ্যের দাম কেন বাড়ছে তার কোন সদুত্তোর সরকার দিতে পারছে না। মন্ত্রীরা মিডিয়ায় জনগণকে হেয় করে আবোল-তাবোল কথা বলছেন। মিডিয়ায় এসেছে বাস্তবে বিভিন্ন পণ্যের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণেই দাম বাড়ছে। এরসাথে সরকার দলীয় মন্ত্রী এমপিরা যুক্ত। তাই সরকার দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধির মহাসংকট থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে গ্রাম ও শহরের গরীব, নি¤œবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমস্ত মানুষকে আর্মি রেটে রেশন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। গ্যাস কোম্পানিগুলোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে বিইআরসি গণশুনানি করেছে। দাম বৃদ্ধির গণশুনানির নাটক শেষে বিইআরসি ২০% গ্যাসের দাম এবং ১০৫ টাকা গ্যাসের চুলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। গ্যাসের মূল্য এ সময়ে বৃদ্ধি হলে জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি ঘটাবে।
নিত্যপণ্যের দাম কমানো ও গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মূল্য বাড়ানোর অপতৎপরতা বন্ধ এবং ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন উচ্ছেদ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় আগামী ২৮ মার্চ সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী হরতাল আহŸান করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের মানুষকে এই হরতাল সফল করতে এগিয়ে আসার আহŸান জানান।