সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
শীতের বিদায়ের পথ ধরে সহাস্যে উঁকি দেয় ঋতুরাজ বসন্তের হাওয়া। যে হাওয়ার ছোঁয়ায় প্রকৃতি নেচে ওঠে। দুলে ওঠে মানুষের মন। পাখ-পাখালির মনেও কি শিহরণ জাগে? হয়ত জাগে।
বসন্তে শত ফুলের রঙ, বাতাসে কচি পাতার কাঁপন গোটা প্রকৃতিকেই যে আলো ঝলমলে করে তোলে। বসন্তের রঙ ফুল-পাখিহীন নগরকেও রাঙিয়ে যায়।
কবি সুভাস মুখোপাধ্যায় লিখেছেন- ফুল ফুটুক আর না ফুটুক/ আজ বসন্ত।
বসন্তই যদি হবে, ফুল ফুটবে না কেন? ফুল ফোটার প্রতিশ্রুতি নিয়েই তো বসন্ত আসে। আজ যেমন এসেছে। আজ পহেলা ফাল্গুন, ১৪২৫। বাংলা বর্ষপঞ্জির ফাল্গুন-চৈত্র মাস মিলে বসন্ত ঋতু। ঋতুরাজ।
বসন্ত মানেই নতুন সাজে প্রকৃতি মুখরিত হওয়ার দিন। ফুল ফোটার পুলকিত সময়। শীতের জরাগ্রস্ততা কাটিয়ে নতুন পাতায় ঋদ্ধ হয়ে উঠবে রুক্ষ প্রকৃতি। ফাগুনের ঝিরঝিরে বাতাস আর কোকিলের মিষ্টি কলতানে উন্মাতাল হবে প্রকৃতি। ফুলেল বসন্ত যৌবনের উদ্দামতা বয়ে আনে। আনন্দ আর উচ্ছ্বাস মুখরতায় মন-প্রাণ ভরিয়ে তোলে।
প্রকৃতির মতোই শিল্প-সাহিত্য এমনকি রাজনীতিতেও বসন্ত বাঙালি জীবনে তাৎপর্যময়। এ বসন্তেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। বসন্তেই বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের শুরু। বসন্তের আগমনবার্তা নিয়ে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ ও ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’।কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগে বসন্তের দোলা। উৎসবে মেতে ওঠে নগরবাসী। ফুলের মঞ্জরিতে মালা গাঁথার দিন বসন্ত শুধু প্রকৃতিকেই রঙিন করেনি, আবহমানকাল ধরে বাঙালি তরুণ-তরুণীর প্রাণও রঙিন করেছে। তাই আজ পহেলা ফাল্গুনের সুরেলা এ দিনে তরুণীরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশ ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তী রং শাড়ি পরবে আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পায়জামা কিংবা ফতুয়ায় খুঁজে নেবে শাশ্বত বাঙালিপনা।