সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
আপনাদের প্রায় সকলেরই জানা আছে যে, সোনারগাঁয়ের নুনেরটেকের মায়াদ্বীপে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত সুবিধাবঞ্চিত জেলে সম্প্রদায়ের শিশুদের জন্য অবৈতনিক স্কুল ‘মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালা’টি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে একদল দুষ্কৃতকারী হামলা করেছিল গত ২২ জানুয়ারি। সেই হামলার নৃশংস বর্ণনা আপনাদের কাছে আমরা আগেও তুলে ধরেছি।
এই যে আমাদের সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি রয়েছেন। পাখির দেড় বছরের ছোট্ট বাচ্চাটিও তাদের হামলার নৃশংসতা থেকে রেহাই পায়নি। পাখির মা-কে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে, তার দুইভাই শরিফ ও রাশেদকে নৃশংসভাবে পিটানো হয়েছে। তারপর আমরা এই ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করি, সেই মামলা তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। এবং এরই মধ্যে মাত্র একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তিনিও জামিনে ছাড়া পেয়ে চলে গেছেন, কিন্তু পাখিরা এখন গ্রামছাড়া।
তাঁরা এখন সোনারগাঁয়ে একটা জায়গায় আত্মগোপন করে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, যেখান থেকে তাঁরা বেরোতে ভয় পান। অথচ গ্রামে তাদের গবাদি পশুগুলো অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে, তাদের আয়ের প্রধান উৎস মুদি দোকানটি বন্ধ হয়ে গেছে, মাছ ধরতে যেতে পারছেন না পাখির বাবা, এবং সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের স্কুলটি বন্ধ রয়েছে, যে স্কুলটিতে গ্রামের হত-দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা পড়াশুনার সুযোগ পায়। ঘটনার পর হাসপাতালে পাখিরা চিকিৎসা নিলেন, এরপর তাঁরা আর গ্রামে ফিরতে পারলেন না, তাঁরাই এখন পলাতক দিন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই যে আমরা এই ঘটনায় সোনারগাঁয়ে সংবাদ সম্মেলন না করে নারায়ণগঞ্জে চলে এলাম, সেটাও নিরাপত্তাহীনতার বোধ থেকে অনেকখানি।
এই যখন পরিস্থিতি, তখন আমরা আপনাদের কাছে এসেছি।.কী ঘটেছিল সে রাতে? .গত ২২ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার রাত ৯টায় সোনারগাঁ উপজেলার নুনেরটেক গ্রামের মায়াদ্বীপে ‘মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির বাড়িতে হামলা করা হয়। হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার পাখি (২৬), তার ১৫ মাসের মেয়ে পারিশা আক্তার, মা নাসিমা বেগম (৫০), ছোট ভাই মো. শরিফ (২৪) ও মো. রাশেদ (২০)।
.একইসঙ্গে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে। গত ২২ জানুয়ারি, শনিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাশেমের নেতৃত্বে আনোয়ার, মেহেদী, শাহাপরান, দ্বীন ইসলাস, ফয়সাল, রাকিব, রহিম আলী, রমজান, শরিফ, ফাহিম, মাসুদ, মঙ্গল আলী, ইউছুফ, অজ্ঞাত আরও কয়েকজনসহ প্রায় ২০-২২ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির বাড়িতে হামলা চালায়। তারা সেসময় তাঁকে, তাঁর ২ ভাই, এবং তাঁর মাকে মারধর করে।
পাখিকে ঘুষি দিতে গেলে তাঁর ১৫ মাসের মেয়ে পারিশার মাথায় আঘাত লাগে। পরবর্তীতে তাঁদের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন আসলেও কাউকে ঘরের ভিতর ঢুকতে দেয়নি সন্ত্রাসীরা।.পাখির জবানিতে আমরা জানতে পারি, ‘মারধরে আমরা যখন মাটিতে পড়ে যাই তখন তারা আমার ও মায়ের গলার স্বর্ণের চেইন ও ভাইয়ের বিকাশের লেনদেনের জন্য রাখা দোকানের নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায় ভবিষ্যতে স্কুলে পড়াতে গেলে পরিবারের সবাইকে তারা জবাই করে মেরে ফেলবে।
আমরা যাতে নদী পার হয়ে হাসপাতালে না যেতে পারি সেজন্য সকল নৌকার মাঝিকে নিষেধ করে দেয়, তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়। এজন্য কেউ এগিয়ে আসে না।
পরে শাহেদ কায়েস স্যার ট্রলারের ব্যবস্থা করে আমাদের সোনারগাঁ নিয়ে আসেন।’ এ ঘটনায় মামলার বাদী প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির ভাই মো. শরীফ-এর জবানিতে আমরা জানতে পারি, ‘কেন আমাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলেছে, আমার বোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক, মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালায় পড়ায় তাই আমাদেরকে মেরেছে, বারবার বলা সত্ত্বেও কেন পাখি, রাশেদ স্কুলে যায়, এটাই নাকি আমাদের অপরাধ!’.ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি .এই ঘটনার পর মরিয়ম আক্তার পাখি রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে আমার মোবাইলে ফোন দিলে প্রচণ্ড কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাই, সে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সন্ত্রাসীদের অমানবিক ওই নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করে। আমি সঙ্গে সঙ্গে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সোনারগাঁ শাখার সভাপতি লেখক শংকর প্রকাশকে সঙ্গে নিয়ে সোনারগাঁ থানায় ওসি মো. হাফিজুর রহমানকে বিস্তারিত জানাই এবং সহযোগিতা চাই।
ওদিকে সন্ত্রাসী হাশেম ও তার লোকজন নুনেরটেকের সব নৌকার মাঝিকে পাখিদের বহন করে সোনারগাঁয় না নিয়ে আসতে হুমকি দেয়। তখন আমি সোনারগাঁ থেকে ট্রলার পাঠিয়ে ওদেরকে মায়াদ্বীপ থেকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি। আনুমানিক রাত এগারোটায় (২২ জানুয়ারি ২০২২) শংকর প্রকাশ ও আমি সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ঘাট থেকে তাঁদেরকে নৌকা থেকে তুলে এনে সোনারাগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করি।
সেই সময় পাখির মা প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন, তাঁকে কোলে করে ট্রলার থেকে হাসপাতালে আনার জন্য সিএনজিতে তুলতে হয়, তাঁর ভাই মারাত্মকভাবে জখম মো. রাশেদ ব্যথার কারণে সিএনজিতে বসতে পারছিল না। .এরপর তাঁরা সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক সপ্তাহ চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাওয়ার পর ওদের নিরাপত্তাজনিত কারণে সোনারগাঁয়ে একটা ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এখন তাঁরা জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে তাদের গ্রামে, বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। এদিকে বাড়িতে ফিরলে তাদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে মাদক ও হুন্ডি ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় গত ২৩ জানুয়ারি সোনারাগাঁ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার নম্বর ৩২, তারিখ ২৩.০১.২০২২। এই মামলায় এই পর্যন্ত মাত্র একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।.ঘটনার পূর্বাপর.আমরা সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০০৭ সালে নুনেরটেকের মায়াদ্বীপে ‘মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালা’ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করি।
এখানে কৃষক, জেলে ও নিম্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা পড়াশোনা করে। এই স্কুলটি সম্পূর্ণ অবৈতনিক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। .পরবর্তীতে ২০১০ সালের জুন থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী ওসমান মেম্বার, মো. হাশেম, জাকারিয়াসহ আরও অনেকে অবৈধভাবে বালু কাটার ফলে চরের তিন ভাগের এক ভাগ নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। তখন থেকে আমি গ্রামবাসীদের নিয়ে চর রক্ষায় “মায়াদ্বীপ রক্ষা আন্দোলন” নামে একটি আন্দোলন গড়ে তুলি। ফলে কিছুদিনের জন্য বালু কাটা বন্ধ হয়। এতে বালু সন্ত্রাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়ি নিরীহ গ্রামবাসীসহ আমি।
যার প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে ২ বার মাঝ নদীতে আমার ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ২০১৩ সালে ২৫ জুলাই আমাকে হত্যার উদ্দেশে নদীর মাঝখান থেকে অপহরণ করা হয়। সে যাত্রায় সাংবাদিক ভাইদের তৎপরতায় ও পুলিশ বাহিনী এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাকে দ্রুত উদ্ধার করা গেলে আমি প্রাণে বেঁচে যাই।.ওই বালু সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন স্কুলটি বন্ধের পায়তারা করে আসছিল। এর আগে একবার স্কুলের বেঞ্চসহ আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে দরজায় তালা দিয়ে দেয়। কিন্তু পরে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় স্কুল ফের চালু হয়।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ১৬ মাস বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে আমরা আবার নতুন করে অন্য একটি স্থানেএকটি ভাড়া বাড়িতে স্কুলটি চালু করি। এরপর থেকেই ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসীগোষ্ঠীটি শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ, স্কুলবাড়ির জায়গার মালিক সাব মিয়াকে গত ৫ মাস ধরে বিভিন্নভাবে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিল। স্কুল বন্ধ না করলে প্রাণে মেরে ফেলাসহ স্কুলে আগুন দেওয়া হবে বলে তারা হুমকি দেয়। এমনকি আমাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়। এসব হুমকির পরও আমরা স্কুল চালু রাখি।
আমরা সে সময় এই ঘটনার কথা এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনকে অবহিত করি। .যারা স্কুল শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা আগে বালু সন্ত্রাসী ছিল। এখন তারা এলাকায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এখানে স্কুল থাকায় অনেক ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। তাদের অপকর্মে বাধা দিচ্ছে। তারা ভাবছে স্কুল না থাকলে আমি বা প্রশাসনের কেউ সেখানে যাবে না। তারা সকল অপকর্ম অবাধে চালিয়ে যেতে পারবে। এজন্যই স্কুলটি বন্ধ করতে চায় তারা। স্কুল বন্ধের জন্য ৪ জন শিক্ষককে তারা গত পাঁচ মাস ধরে হুমকি দিয়ে আসছিল।
এর মধ্যে ওই রাতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের অধিকাংশ এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন, এখনো কেউ কেউ করেন। বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাশেমের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। এছাড়া হামলাকারী মেহেদী বারদী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমানে জাতীয় পার্টির নেতা ওসমান মেম্বারের ছেলে।.বর্তমান পরিস্থিতি.বর্তমানে হামলার ঘটনায় মামলা করায় প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখিকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে হামলাকারীরা।
হামলাকারীদের হুমকির কারণে ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না তাঁরা। প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির জবানিতে আমরা আরও জানতে পারি, ‘২২ জানুয়ারি হামলায় আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ২৮ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাই। তারপর বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানতে পারি হামলাকারীরা গ্রামে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, বলছে আমরা বাড়ি গেলে প্রাণে মেরে ফেলবে। আমাদের ঘরবাড়ি ও দোকানে আগুন দিবে। আমাদের গরু জবাই করে খেয়ে ফেলবে। তাই এখানে ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। এখন বাইরে যেতেও ভয় হয়।’.
হামলার কথা স্মরণ করে বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পাখির বাবা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। কান্নারত যে আসে তাকেই তিনি বারবার বলতে থাকেন, ‘পড়ালেখা করে কী হবে? পড়ালেখা করলে যদি এভাবে নির্যাতিত হতে হয়, তবে কেন ছেলে মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছি? আজকে আমরা ঘর ছাড়া।’ তিনি বলেন, ‘বাড়িতে ফিরতে পারছি না। আমাদের মুদির দোকান বন্ধ। নদীতে মাছ ধরতে পারছি না। কোনো আয় রোজগার নাই। না খেয়ে কষ্ট করতে হচ্ছে।’
পাখির ছোট ভাই সোনারগাঁও সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, ‘পড়ালেখা বন্ধ হয়ে আছে। শিশুদের স্কুলের আমিও একজন শিক্ষক। সেটাও বন্ধ।’ মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘আমাদের একটা গাভী ও বাছুর আছে। সেটাও এখন প্রতিবেশির বাড়িতে। বাড়িতে সবজি, ফল গাছ সবই আছে। এগুলো সবই নষ্ট হচ্ছে। আমরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই।’.’মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা’র প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি ও তাঁর পরিবারের উপর অমানবিক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এবং আসামীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে এরই মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে ‘নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট’, গত ২৭ জানুয়ারি সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে সোনারগাঁয়ের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘তারুণ্যের সোনারগাঁ’, এবং গত ৩০ জানুয়ারি সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের সামনে যৌথভাবে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সোনারগাঁ শাখা ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সোনারগাঁ শাখা মানব বন্ধন করেছে।.আমরা যা চাচ্ছি .হামলার ঘটনায় মামলা করার পর পুলিশ ১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। বাকীরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছে।
তারাই বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। বলছে, গ্রামে ফিরে গেলে পাখিদের মেরে ফেলবে। আমরা চাই আসামিদের যারা জামিন নেয়নি তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের হামলা বা স্কুল বন্ধের পাঁয়তারা করতে সাহস না পায়, যাতে কোনো শিক্ষকের উপর হামলা করার দুঃসাহস না করে। একইসঙ্গে প্রধান শিক্ষকের পরিবার যেন দ্রুত নিরাপদে গ্রামে ফিরে স্কুল চালু করতে পারে সে জন্য আমরা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা যেন পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত না হয়। সবশেষে আমরা চাই আমাদের মামলার বাদী প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির ভাই মো. শরিফের নামে দায়ের করা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মিথ্যা অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রত্যাহার করে নেওয়া হোক। .সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, সংস্কৃতিকর্মী ও কবি শাহেদ কায়েস।
.সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও শিল্পী রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শঙ্কর রায়, মায়াদ্বীপ জেলেশিশু পাঠশালার প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সোনারগাঁ শাখার সভাপতি লেখক শংকর প্রকাশ, সাংবাদিক মাহফুজুর রহমান, সাংবাদিক আব্দুস সালাম, কবি ও সাংবাদিক নাফিজ আশরাফ, সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবীন, সাংবাদিক ও লে