মেয়েটির নাম সুইটি। বয়স বারো বছর। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানায়। গ্রাম নবাবপুর। অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা তাকে রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হয়েছে। এখানে সে নয় মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তাকে নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকত্রী স্বামী-স্ত্রী উভয়েই মারধর করে। এক পর্যায়ে মেয়েটিকে নির্যাতনে আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন এক প্রতিবেশি। পোস্ট দিয়েছেন শনিবার (৩ জুলাই) রাতে। ছবিগুলো পোস্ট দিয়ে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থার জন্য লিখেছেন।
ছবিতে মেয়েটির চোখের নীচে আঘাতের চিহ্ন। হাতে গুরুতর জখম এবং অপর একটি ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎদেশে উভয়পাশে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এই দৃশ্য যে কারো বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য। এই পোস্টটি জিটিভি’র এক নারী সংবাদকর্মীর চোখে পড়লে তিনি তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বিষয়টি জানার সাথে সাথেই ওসি রমনা মো. মনিরুল ইসলাম, পিপিএম এবং ওসি শাহবাগ মওদুত হাওলাদার এর সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।
উভয় থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরবর্তীতে জানা যায় ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর, ওসি শাহবাগ মওদুত হাওলাদারের তাৎক্ষনিক তৎপরতায় শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন্স মো. কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত স্বামী মো: তানভির আহসান এবং স্ত্রী এডভোকেট নাহিদকে গ্রেফতার করে।
ফেইসবুকে দেয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই বিষয়টি কোনো এক সচেতন নাগরিক ৯৯৯ কেও ফোন করে জানায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকেও থানার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, শিশুর প্রতি যে কোনো প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।