সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানা রাজবাড়ী এলাকার ৫ মাসের গর্ভবতী রোজিনা বেগম(৩৩) নামে এক গৃহবধুর লাশ নিহতের ভাইয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়না তদন্তের জন্য ৩৫ দিন পর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর খুড়ে লাশ উত্তোলন করেছে নারায়ণগঞ্জ পিবিআই কর্তৃপক্ষ। যার মামলা নং-৩২৪ ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে কল্যান্দি কবরস্থানে মরদেহটি উওোলন করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আসমা সুলতানা শারমিনসহ পিবিআই তদন্তকারী অফিসার এএসঅআই আবু সায়েমসহ সঙ্গীয়ফোর্স। নিহত গৃহবধু রোজিনা বেগম রাজবাড়ী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদারের মেয়ে।
জানাগেছে,গত ৩বছর পূর্বে বন্দর রাজবাড়ী এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদারের মেয়ে রোজিনা বেগমের সাথে একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মুরাদ মিয়ার সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের দাম্পত্ত জীবনে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
তবে বিবাহের শুরু থেকেই তাদের জীবনে দাম্পত্ত কলহ লেগেই থাকত। সংসারের সুখের আশায় গৃহবধু রোজিনা বেগম সবকিছু নিরবে সব অত্যাচার সহ্য করে নিত। গত মাসে রোজিনা বেগম ৫মাসের গর্ভবতী হলে পাষন্ড স্বামী মুরাদ তার স্ত্রীকে ঠিকমত চিকিৎসা না করিয়ে উল্টো শারিরীক নির্যাতন করত। গত ১২ অক্টোবর মুরাদ,তার মা পিয়ারা বেগম মিলে ফের গর্ভবতী রোজিনাকে অমানুষিক নির্যাতন করলে সে অসুস্থ্য হয়ে মারা যায়।
গত ১৩ অক্টোবর রোজিনার পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদার ও তার ভাই মাসুদ সরদারকে জানানো হয় তার মেয়ে স্টোক করে মারা গেছে। তাৎক্ষনিক স্বামী মুরাদ তার মা পিয়ারা বেগম,জিয়াসমিন,লার্সন,কুতুব উদ্দিনসহ রোজিনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন কৌশলে মরদেহ কল্যান্দি কবরস্থানে দাফন করে। পরে রোজিনাকে নির্যাতন করে মার্ডার করা হয়েছে জানতে পেরে পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা জব্বর সরদার ও তার ভাই মাসুদ সরদার নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল আদালতে স্বামী মুরাদসহ উল্লেখিতদের আসামী করে মামলা করলে মোকাদ্দমাটি পিবিআই এর কাছে তদন্তে চলে আছে।
এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২২অক্টোবর) না’গঞ্জ পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানের নির্দেশে এএসআই আবু সায়েম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে কল্যান্দি কবরস্থান থেকে মাটি খুড়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে।
বাদী মাসুদ সরদার বলেন, আমার বোন রোজিনাকে অমানুষিক নির্যাতন করে পাষন্ড স্বামী মুরাদ ও তার পরিবারের লোকজনেরা হত্যা করেছে বলে আমাদের ধারনা। আমরা এ হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার চাই।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী পিবিআই কর্মকর্তা আবু সায়েম বলেন,নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল আদালতে বাদী মামলা করার পর তদন্তের ভার দেয় পিবিআই নারায়ণগঞ্জকে। না’গঞ্জ পিবিআই পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান মহোদয়ের নির্দেশে আমি এসআই আবুল খায়ের তদন্তের দায়িত্ব পাই। তদন্তকালে আমি দেখতে পাই গত ১৩ সেপ্টেম্বর গৃহবধু রোজিনা বেগম মৃত্যু বরন করে। সুষ্ঠো তদন্তের স্বার্থে না’গঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে ১ম শ্রেণীর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর উপস্থিতিতে লাশটি কবর থেকে খুড়ে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল মর্গে প্রেরন করি।
বন্দর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) বলেন ,কোর্টের আদেশ পেয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে কবর খুড়ে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি।