সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে, অবৈধ যানবাহন ও অবৈধ ষ্ট্যান্ড উচ্ছেদে নিরলসভাবে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টি আই) সোহরাব আহমেদের নেতৃত্বে কাজ করছে তারা।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগষ্ট) দিনব্যাপী ট্রাফিক পুলিশের এ তৎপরতা চোখে পড়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে শরীরের ঘাম ঝড়িয়ে কাজ করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। একইসময়ে নির্ধারিত স্থানের বাইরে গণপরিবহনে চলন্ত অবস্থায় গাড়িতে যাত্রী তোলা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, শহীদ মিনার-খাজা মার্কেট সহ চাষাড়ার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে সিএনজি-অটোরিক্সা, রিক্সা রেখে জটলার সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু যানচালক।
তখনই ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সোহরাব আহমেদের নেতৃত্বে বেশ কিছু যানবাহনকে জরিমানা করা হয় এবং রেকার বিল আদায় করা হয়। এছাড়া রিক্সা চালকদের সতর্ক করা, কোনো অবৈধ ষ্ট্যান্ড গড়ার জন্য যানবাহন চালকদের অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা। শান্তনা মার্কেটের এক দোকানদার বলেন, ‘রোদ, বৃষ্টি, ঝড় যাই হোক না কেন ট্রাফিক পুলিশরা সবসময় মাঠেই (রাস্তায়) থাকে। কোনো মুহূর্তেই এরা সেবা থেকে বাইরে থাকে না।’ ভারী বর্ষণেও ছাতা বা রেইন কোর্ট নিয়ে রাস্তায় কাজ করতে হয়। আর থাকার সুযোগও নেই। তিনি আরো জানান, কখনো কখনো ট্রাফিক পুলিশের সাথে সাধারণ মানুষ অনেক সময় খারাপ আচরণ করেন বলেও আমি দেখেছি। তাঁর ভাষ্য, ‘সাধারণত ট্রাফিক পুলিশের কাছে অস্ত্র থাকে না। জনগণ মনে করেন কাউকে গ্রেফতারের ক্ষমতা ট্রাফিক পুলিশের নেই। তাই অনেক সময় খারাপ আচরণও হজম করতে হয় তাদের। ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি আই) সোহরাব আহমেদ বলেন, সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
সড়কে বেশ কিছু দিকে উন্নতি হচ্ছে। যানজট নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা আশানুরূপ পূরণ করতে কাজ করে চলেছি। যানজট সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমরা দিন-রাত কাজ করছি। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও সচেতনতা সৃষ্টি করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। তবে তিনি বলেন, শুধু পুলিশের পক্ষে মামলা, জরিমানা আদায় করে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়। এ জন্য যাত্রী ও পথচারী তথা সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। ডিউটিরত অবস্থায় একজন ট্রাফিক পুলিশের স্বাস্থ্যগত দিক থেকে কী কী সমস্যায় পড়তে হয় তা জানতে চাইলে দায়িত্বরত এ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বলেন, প্রচুর মাথা ব্যথা হয়, চোখের জ্বালাপোড়া হয়। একটানা দাঁড়িয়ে থাকতে অনেক কষ্ট হয়। তিনি আরও জানান, এই সমস্যার কারণে প্রতিনিয়ত কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ট্রাফিক পুলিশদের চিকিৎসা নিতে হয়।তিনি আরো জানান, রোদ-বৃষ্টি, হাঁটুপানি কিংবা বুকপানি যা-ই হোক না কেন, রাস্তায়ই থাকতে হবে। বেশির ভাগ মানুষই ট্রাফিক সিগন্যাল মানতে চায় না। তাদের সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয় তদবিরে।
২০০ টাকা জরিমানা করলেই ফোন ধরিয়ে দেয়। কথা না শুনলে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি খেতে হয়। উল্লেখ্য, দেশের ছোট ছোট রাস্তা থেকে মহাসড়ক পর্যন্ত যানবাহন ও সকল যাত্রীর একমাত্র অতন্দ্র প্রহরী ‘ট্রাফিক পুলিশ’। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে সকলের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখেন তারা। ট্রাফিক পুলিশরা সাধারণত দুই শিফটে কাজ করে থাকেন। সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ২টা এবং দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এই পুরোটা সময় তাদের খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে কিংবা বৃষ্টিতে সর্বদা মনোযোগের সাথে কাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। কেননা তাদের হাতের ইশারার একটু ভুলে থমকে যেতে পারে পুরো শহরের সড়ক ব্যবস্থা।