সকাল নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের তল্লা রেল লাইন এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় দুই-চার জন রাজনৈতিক নেতার ছাত্র ছায়ায় প্রকাশ্যে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে মাদকের করালগ্রাসে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ বাঁধা দিলেই তাকে মারধর করে মাদক দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয় চক্রটি।
এ চক্রটির মূল ঘাটি তল্লা রেল লাইন থেকে চানমারী পর্যন্ত মাদক ছড়িয়ে পড়ছে। এদের কাছে ওই এলাকার মানুষ এখন জিম্মি।
করোনা মহামারির মধ্যেও বন্ধ হয়নি মাদক পরিবহন ও বেচাকেনা। পণ্যবাহী গাড়ি, পিকআপ, ট্রাক, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ, উত্তর ও পূর্বাঞ্চল দিয়ে নানাভাবে নারায়নগঞ্জের খানপুর তল্লাত আসছে মাদকের চালান।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় মাদকের চালান আটক করা হয়েছে। কিন্তু সব চালানের তথ্য জানা যায় না।
নারায়নগঞ্জের খানপুর তল্লা এলাকায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা। কোনেভাবেই থামছে না মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা। বেড়েই চলেছে মাদকের বিস্তার।
মাদকের ফাঁদে পড়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ উঠতি বয়সী যুবকরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এমনকি মাদক প্রতিরোধে পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরসহ প্রশাসন একের পর এক অভিযান চালালেও কোনো কাজে আসছে না।
তল্লা রেল লাইন এলাকা মাদকমুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন বাহিনীর পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালিত হলেও মাদক ব্যবসা ও সেবন কাজ থেমে নেই। সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারী চক্র নতুনভাবে কৌশল পরিবর্তন করে অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
জেলা শহর ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। নারী-পুরুষ সকলে মিলেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও রয়েছে অভিযোগ। মাদক মামলা ও প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে অনেকে মাদক ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু নতুন করে যুবক ও শিক্ষার্থীরা যুক্ত হচ্ছেন এই ভয়াবহ ব্যবসায়। অধিক মুনাফা লাভের আশায় ইয়াবা ও ফেনসিডিল ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করছে তারা।
এমনও দেখা গেছে রাত করে যখন সন্তান ঘরে ফিরছে তখন তার মা খাবারের কথা বলা মাত্রই বলা হচ্ছে ক্ষুধা নেই। কোনমতে জামাকাপড় ছেড়ে গভীর ঘুম। বেশিমাত্রায় অনুরোধ করলে বলা হয় বাইরে থেকে খেয়ে আসছি। অথচ বাইরে থেকে সত্যি খেয়েছে সেটা হয় ফেনসিডিল না হয় অন্য যে কোন মাদকদ্রব্য।
এমন উদাহরণ দিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদকসেবীর বাবা। এ অবস্থায় পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হবার পাশাপাশি বিষাক্ত হয়ে উঠছে এ জনপদ। সন্তানের অত্যাচারের কারণে কখনো কখনো বাবা-মাকে থানায় যেতে দেখা গেছে সন্তানকে জেলে পাঠাবার জন্য। মাদকের কারণেই পিতামাতা ও পরিবারের স্বজনরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।