সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
রোডের পশ্চিমাংশের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ড। প্রায় ১.২৭ বর্গ কিলোমিঠার আয়োতনের এ ওয়ার্ডের মোট জনসংখ্যা (বি.বি.এস- ২০১১ অনুযায়ী) ১৯ হাজার ৪শ ৩১ জন। বর্তমানে এ ওয়ার্ডটিতে রয়েছে নানা সমস্যা। এর মধ্যে ওয়ার্ডবাসীর প্রধান সমস্যা হয়ে দারিয়েছে মশা। এখানে মশার উপদ্রব এতটাই বেশি যে মশারি টাঙ্গিয়েও নিস্তার পাচ্ছেন না ওয়ার্ডবাসী। রাতের ঘুম রীতিমত হারাম করে দিচ্ছে মশা।
এ নিয়ে ওয়ার্ডবাসীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, বর্তমানে এমনিতেই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে আছি। আর এর মধ্যে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আতঙ্ক। এখানে উপদ্রব এতটাই বেশি যে, কে কখন মশার কামড়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হই তা নিয়েই ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। মশার জন্য ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ রাতে একটুও ঘুমানো যাচ্ছেনা। মশারি কিংবা মশার কয়েল জ্বালিয়েও নিস্তার পাওয়া যাচ্ছেনা মশার যন্ত্রণা থেকে।
সিটি কর্পোরেশন থেকে মশার ঔষুধ ছিটানো হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে ওয়ার্ডবাসী আরও বলেন, আগে মাঝে মধ্যে ওষুধ ছিটানো হতো কিন্তু এখন একেবারে হয় না বললেই চলে যারা মোশারফ হচ্ছে তারা ময়লা-আবর্জনায় স্থান গ্রীন যেখানে মশা বংশবৃদ্ধি করে সেখানে না চিটিয়ে ঔষধ মাত্র সড়ক দিয়ে একবার হেটে যায় কোন লাভ হয় না শুধু শুধু সিটি কর্পোরেশনের পয়সা খরচ হয়। এদিকে ১৪নং ওয়ার্ড ঘুরে আরো বেশি কিছু সমস্যার কথা জানা গেছে তার মধ্যে মাদক চিন্তায় অন্যতম এছাড়াও সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগ চরমে ধারণ করছে এলাকাটিতে সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ওয়ার্ডবাসী তারা বলেছেন ওয়ার্ড টিতে আগের চাইতে মাদক ছিনতাইয়ের ঘটনা কিছুটা কমলেও থেমে নেই এসব অপকর্ম এখনো এখনো উকিলপাড়া রেললাইন ও বোয়ালিয়া খাল সহ বেশ কিছু এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে চলেছে সকল এলাকার অলিগলিতে উৎপেতে থেকে থাকে বেশ কিছু ছিনতাইকারী চক্র তারা সুযোগ পেলে অসহায় নিরীহ মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিচ্ছে তাদের কষ্টার্জিত টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার সহ আরো অনেক কিছু। যেন কিছুতেই দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না ঐ সকল ছিনতাইকারীদের তাদের এসব অপকর্ম বন্ধে স্থানীয় কাউন্সিলর ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন ওয়ার্ডবাসী। তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির।
তিনি বলেন, আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না শুধু বলতে চাই আমি কাউন্সিলর থাকাকালীন সময়েও সহযোগিতা এসব উন্নয়ন করেছিলাম এবং যেসব উন্নয়ন কাজ চলমান ছিল পরবর্তীতে কাউন্সিলর এসে আমার সেইসব কাজগুলো সমাপ্ত করেছেন এর বাইরে নতুন কোনো উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই তবে আমার চাইতেও এসব বিষয় নিয়ে ভাল বলতে পারবেন এলাকার জনগণ কারণ তারা দেখেছেন এলাকার উন্নয়ন কোন কোন জনপ্রতিনিধি কি কি করেছেন।
এদিকে মশার সমস্যার কথা স্বীকার করে বর্তমান কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধান বলেন, মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ার মশা মশা নিধন কর্মসূচি গত দুই বছর ধরে চলছে মাননীয় মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি আমাদের ওয়ার্ডে পাওয়ার জন্য সহকর্মী দিয়েছেন যারা প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরাসরি আছে আমি মনে করে আমার ওয়ার্ডের মশা আগের থেকে এখন অনেক বেশি কমে গেছে।
মাদক ও ছিনতাইকারী প্রসঙ্গে দুইবার নির্বাচিত কাউন্সিলর বলেন, বিভিন্ন এলাকা ছেলেদের নিয়ে আমাদের এলাকায় ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এরা মূলত চিন্তায় চিন্তায় পড়ে থাকে। আমি ইতিমধ্যে প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি প্রশাসনসহ আমরা চেষ্টা করছি বন্ধ করতে। এখানে মাদক সমস্যা আজকে থেকে না আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন একটা সৈনিক মদ বিক্রি করতো গাজার খুব প্রকট ছিল আমি তখন থেকে এসবের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছি এবং এখনো আরো অপকর্ম বন্ধে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তিনি বলেন অনেক ভদ্র ঘরের সন্তান এলে মাদকের সাথে জড়িত রয়েছে তাই মাদক চারা বিক্রি করে তাদের সাথে আপার শ্রেণীর ওই লোকেদের একটা সম্পর্ক থাকে আমি মনে করি শুধুমাত্র মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক ব্যবসায়ীদের একটা তালিকা হওয়া উচিত তাদের কারণে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি মাদক নির্মূলে সমাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। ঘটনা এমন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্তমান সিটি কর্পোরেশন অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল বহু আলোচিত ঐতিহ্যবাহী কুকুর অবমুক্ত করে ব্যবহার উপযোগী করে দেওয়া গত বছর এ বিষয় নিয়ে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ আলো আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছিলেন বর্তমানে কাউন্সিলর ১৪ নং ওয়ার্ড।
কেঁদে এই প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি 2016 সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরপরই পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম বর্তমানে এ ঘটনাগুলো ময়লা আবর্জনা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কি কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জানিনা। তবে এখানে কিন্তু সিটি কর্পোরেশনে কেউ মরেনা বর্তমানে ছয়টার মধ্যে দুইটি ঘাটলা সচল আছে ওই দুইটাতেই এখন রক্ষণাবেক্ষণ করছি তবে আমি বেশ কয়েকজন লোক পাঠিয়ে ছিলাম পুকুরটিকে পরিষ্কার করার জন্য কিন্তু সেখানে ময়লা এত বেশি যে ছাড়া সম্ভব না। আর এই কাজটি করতে হলে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা লাগবে। সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা ছাড়া কোনভাবেই পুকুর পরিষ্কার করা সম্ভব না।
এছাড়াও তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পর থেকে আমি এলাকায় বহু কাজ করেছি। রাস্তাঘাটে ট্রেনে উন্নয়নকাজ সহ অনেক কাজই করা হয়েছে। এখন শুধু একটি কমিউনিটি সেন্টার খুব প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা নিয়েও ইতিমধ্যে কথা বলছি। পানিট্যাঙ্কি এলাকাতে এ কমিউনিটি সেন্টার হওয়ার কথা রয়েছে আমি পুনরায় নির্বাচন হলে এই কাজটি সবার আগে করার চেষ্টা করব।