সকাল নারায়ণগঞ্জঃ
স্টাফ রিপোর্টার (আশিক)
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা জামাই বাজার এলাকায় একটি ৩ তলা ভবনে গ্যাস বিস্ফোরণে শিশুসহ ১১ জন দগ্ধ হওয়ার ঘটনার কারণ উদঘাটন করতে তিতাসের পরিচালককে (অপারেশন) প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন। আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতাসের ডিজিএম (প্রশাসন) আব্দুর রহিম। শনিবার (২৪ এপ্রিল) এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে ওই ঘটনায় কোন মামলা দায়ের না হলেও শনিবার পুলিশের পক্ষ থেকে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি জিডি দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুজ্জামান। তিনি জানান, আমরা একটি জিডি দায়ের করে ঘটনাটির তদন্ত করছি।
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মধ্যে গুরুত্বর দগ্ধ ৬জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তবে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।
এর আগে পশ্চিম তল্লা এলাকায় গ্যাস থেকে ভয়াবহ বিস্ফোণের পর ওই ক্ষতিগ্রস্ত তিনতলা বাড়িটি সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিল্ডিংটির ডিজাইন এবং স্থায়িত্বের রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সরকারি পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।
কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা আক্তারকে আহবায়ক ও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরাকে সদস্য সচিব করে এবং ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, তিতাস সহ সকলের সমন্বয়ে একটি সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) ভোর ৬টায় তল্লা জামাইবাজার এলাকাতে আল আমিনের মালিকানাধীন ৩ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই ফ্ল্যাটের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গিয়ে পাশের দোতলা ভবনের ছাদে পড়ে। বিস্ফোরণে ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটের দরজা-জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া পাশের দোতলা ভবনের দরজা-জানালা ও দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়।
তিন তলায় দুই পরিবার নিয়ে একটি ফ্ল্যাট বাসায় বসবাস করতেন। তাদের দুই পরিবারের রান্নাঘর ছিল একটি। দগ্ধরা হলেন ‘হাবিবুর রহমান (৫০), লিমন (২০), সাথি (২০), মিম (২০), মাহিরা (৩ মাস), আলেয়া (৫০), সোনাহার মিয়া (৪০), শান্তি (৩২), সামিউল (২০) ও মনোয়ারা (২২)। আরো একজনের নাম জানা যায়নি।
তাদের মধ্যে ৬ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। আর বাকি ৫জনকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাপসাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ‘বাসায় গ্যাসের চুলা লিকেজ হয়ে কিংবা রান্নার পর ভালোভাবে চুলা বন্ধ করেনি ফলে গ্যাস নির্গত হতে থাকে। তাছাড়া ঘরের সবগুলো দরজা জানালা বন্ধ ছিল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্নার চুলা জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে ভবনের একটি দেয়াল, দরজা, জানলা ভেঙে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।’